নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা;  করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ১০ দফা দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ নীলফামারী জেলা শাখা আজ রবিবার সমাবেশ করেছে।

বাসদ নীলফামারী জেলা শাখার আহ্বায়ক ইউনুছ আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বাসদ জেলা শাখার সদস্য সচিব হামিদুল ইসলাম, বাসদ সদস্য পরিমল রায়, ছাত্র ফ্রন্ট জেলা শাখার সংগঠক জাকির হোসেন, জেলা সদস্য মহেন রায়।

এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, মরণঘাতী করোনা ভাইরাস নিয়ে গোটা বিশ্ব আতঙ্কিত। ইউরোপের উন্নত দেশগুলো ও আমেরিকার মতো দেশও এ রোগটি নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের দেশেও এ পর্যন্ত প্রায় ২৪ জন রোগী করোনা সনাক্ত হয়েছে। যে কোনো সময় একটি ভয়াবহ ব্রেকআউটের সম্ভাবনা নিয়ে আমাদের দেশ অবস্থান করছে। কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি সে তুলনায় নেই বললেই চলে। বিদেশফেরত যাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে তারা বিক্ষোভ করছেন। বেশিরভাগ হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট চালু হয়নি। যারা বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে আছেন বলে সরকারি হিসাব আছে, তাদের কোয়ারেন্টাইন পরিস্থিতি কী তা পত্রিকায় এসেছে।

ফলে কার্যত আমাদের হাতে কোনো সত্যিকারের চিত্র নেই। সংক্রমণ পরিস্থিতি বোঝার জন্য আমাদের নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীদের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা দরকার। সেটাও আজ পর্যন্ত করা হয়নি। ‘পয়েন্ট অব এন্ট্রি’ আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলাম না, মাঠ পর্যায়ে সার্ভিলেন্স টিম করলাম না, ট্রেইন্ড মেডিকেল টিম তৈরি করলাম না, সারা দেশকে কয়েক ভাগ করে ল্যাব ফ্যাসিলিটি দাঁড় করাতে পারলাম না, এমনকি একেবারে প্রাথমিক ব্যাপার-আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা পর্যন্ত করতে পারলাম না-সেখানে জমায়েত আর স্কুল কলেজ বন্ধ করেই কি শুধু এর বিস্তার ঠেকানো যাবে? পত্রিকার খবরেই প্রকাশ হয়েছে, যেসব চিকিৎসক ও নার্স করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের চিকিৎসা করবেন, তাঁদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তাসামগ্রী বা পারসোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্টও (পিপিই) হাসপাতাগুলোতে নেই।

আবার রোগীদের চিকিৎসার সমস্ত ব্যয়ভার নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কোনো নির্দেশনা নেই। এ ধরনের মহামারী প্রতিরোধ করা ব্যক্তিগত পর্যায়ে সম্ভব নয়। রাষ্ট্রের উদ্যোগই এক্ষেত্রে মুখ্য। অপরদিকে সাধারণ মানুষ উপযুক্ত জ্ঞানের অভাবে এ নিয়ে আতঙ্কে আছেন। সতর্কতা কী নিতে হবে, কী বিষয়ে সতর্ক হতে হবে, কী বিষয়ে অযথা চিন্তা করার দরকার নেই-সে সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার সরকারি উদ্যোগ খুবই অপর্যাপ্ত। এতে মানুষ এক অজানা আতঙ্কে ভুগছেন। আমরা জনগণকে আহ্বান করব আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হওয়ার জন্য। ব্যক্তিগত পর্যায়ে যতটুকু সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার, তা সকলে অবশ্যই করবেন। কেউ যদি না করে তাকে সতর্ক করবেন। কিন্তু কেবলমাত্র ব্যক্তিগত সতর্কতা মহামারী হলে তা থেকে আপনাকে রক্ষা করতে পারবে না। তাই বক্তিগতভাবে সতর্ক ও নিরাপদ থাকার পাশাপাশি রাষ্ট্রের এই উদ্যোগহীনতা ও নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন।

আমাদের বাণী ডট কম/২২ মার্চ ২০২০/টিএ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।