হুমায়ুন কবির, কুষ্টিয়া জেলা সংবাদদাতা; প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক কুষ্টিয়া জেলায় চাষযোগ্য অনাবাদী জমিগুলোকে চাষের আওতায় নিতে গুরুত্বপূর্ন সিধান্ত গ্রহন করেছে জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন। জেলা প্রশাসক জেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)সহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের একটি চিঠি পাঠিয়েছেন গত মাসের শুরুতে।
- ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, যে সমস্ত ভূমি মালিকগন তাদের জমি অনাবাদী/পতিত ফেলে রাখছেন বা রেখেছেন তাদের জমি ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ত আইনের ৯২ ধারা মোতাবেক ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত করার আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
অর্থাৎ কেউ যদি তার কৃষিজমিতে চাষাবাদ না করেন তাহলে সেই জমি সরকার নিয়ে নেবে। একই ধরণের একটি ‘গণবিজ্ঞপ্তি’ প্রকাশ করেছেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকও।
- এতে বলা হয়েছে, “কোন জমি পতিত রাখা যাবেনা। কৃষি জমি পতিত রাখা আইনের চোখেও একটি অপরাধ। এরপরেও যদি কোনো ব্যক্তি তার জমি কৃষিকাজে ব্যবহার না করে পতিত রাখেন তাহলে উক্ত জমি রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ত আইন ১৯৫০ এর ৯২(১) ধারা মোতাবেক খাসকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।’
এ বিষয়ে জেলার খোকসা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ কুমার সাহা আমাদের বাণী ডট কম কে বলেন প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের একটি চিঠি এসেছে যেখানে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পতিত জমি রয়েছে সমস্ত জমিতে আবাদের জন্য আমরা আবারও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সকল জমিগুলো আবাদযোগ্য আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে নির্দিষ্ট করে তিনি বলতে পারেননি উপজেলায় আবাদযোগ্য জমি কতটুক আছে।
- এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো: আসলাম হোসেন আমাদের বাণী ডট কম’কে বলেন , তাদের মূল বিষয় হলো প্রত্যেকটি জায়গা যেন আবাদের আওতায় চলে আসে। মানুষের জমি কেড়ে নেয়া সরকারের উদ্দেশ্য না, উদ্দেশ্য হলো প্রত্যেকটি জমি যেন ফসলের আওতায় চলে আসে। কারণ এ মূহুর্তে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, ধরুণ আপনি ঢাকায় থাকেন, গ্রামে জমিজমা আছে। জমিটিতে চাষাবাদ করলেন না, বর্গাও দিলেন না বরং ফেলে রাখলেন। আমরা চাই সেটি চাষাবাদের আওতায় আসুক। কি প্রক্রিয়ায় জমি সরকার নেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে তার বক্তব্য শোনা হবে যে কেন তিনি জমি ফেলে রেখেছেন। তার বক্তব্য শুনে বিবেচনায় নেয়ার মতো হলে সেটি গ্রহণ করা হবে। সরকার জমি এভাবে নিলেও পরে তা ভূমিহীনদের মধ্যেই বিতরণ করে।
- উল্লেখ্য, কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসেবে দেশে মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ প্রায় ৮৬ লাখ হেক্টর। এর মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ হেক্টর জমি আবাদযোগ্য হলেও পতিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর বাইরে বিপুল পরিমাণ খাসজমি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে। সম্প্রতি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিয়মিত কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ধরণের অনুষ্ঠানে তিনি কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের নির্দেশনাও দিয়েছেন।
আমাদের বাণী ডট কম/০৪ জুন ২০২০/সিসিপি