ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা;  রোস্টারিং করে বাসা থেকে অফিস করার সুযোগ পেলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার (০৪ জুন ২০২০) সন্ধ্যায় এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

  • অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সকল বিভাগীয় প্রধান এবং শাখা অফিসের প্রধান নির্বাহী বা মহাব্যবস্থাপক অফিসের কাজের গুরুত্ব বিবেচনায় ও বাস্তবতার নিরিখে সুষ্ঠুভাবে অফিস পরিচালনার নিমিত্তে পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব বণ্টন বা রোস্টারিং করতে পারবেন।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরামর্শ, ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে সশরীরে উপস্থিত হওয়ার বিরতিকাল এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে স্বাস্থ্যঝুঁকি ন্যূনতম পর্যায়ে থাকে এবং দৈনন্দিন কাজে কোনও বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়।

  • আদেশ অনুযায়ী, ‘যেসব কর্মকর্তা বাসায় অবস্থান করবেন, তাদের বাসা থেকে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। কেউই কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না। এ সময় যেসব কর্মকর্তা অফিসে এসে কাজ করবেন তাদের দুপুরের খাবার দেওয়া হবে।’

এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে কাজ করছিলেন। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া শতাধিক কর্মীর মধ্যে জীবাণুটির উপসর্গ দেখা দিয়েছে।

  • যদিও করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বাংলাদেশ ব্যাংক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে। অথচ এই প্রতিষ্ঠানেই তেমন কোনও নির্দেশনা ছিল না। এ কারণে বাধ্য হয়ে কয়েকদিন ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গাদাগাদি করে অফিস করেছেন, লিফটে উঠেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল বর্তমান পরিস্থিতিতে গভর্নর ফজলে কবিরের কাছে চিঠি দেন। এতে করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলা ও কর্মীদের সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক ভিত্তিতে রোস্টারিং ডিউটি ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (০৪ জুন ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ৭৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৪২৩ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৭ হাজার ৫৬৩ জনে।৫০টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৭৮৮টি এবং পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৪টি। আক্রান্তের হার ১৯.০৯ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৭১ জন এবং এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১২ হাজার ১৬১ জন। সুস্থতার হার ২১.১৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১.৩৬ শতাংশ। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে জানানো হয়, পুরুষ ২৯ জন ও নারী ছয়জন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৯ জন, সিলেট বিভাগের একজন, রাজশাহী বিভাগের একজন, বরিশাল বিভাগের একজন ও খুলনা বিভাগের একজন। বয়স বিশ্লেষণে জানা যায়, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৩১-৪০ একজন, ৪১-৫০ তিনজন, ৫১-৬০ ১৪ জন, ৬১-৭০ ১১ জন, ৭১-৮০ দুইজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ২২ জন, বাড়িতে ১২ জন ও হাসপাতালে আনার পথে একজন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ৩৮৬ জনকে। আইসোলেশন থেকে ছাড় দেয়া হয়েছে ১৩০ জনকে।

আমাদের বাণী ডট কম/০৫ জুন ২০২০/সিসিপি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।