কুষ্টিয়া ভেড়ামারা থানার একটি মাদক (হিরোইন) মামলায় এক ট্রাক চালকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রবিবার দুপুর দেড় টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী জনাকীর্ণ আদালতে আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষনা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামী হলেন- দৌলতপুর উপজেলার গরুরা গ্রামের মৃত: লিয়াকত আলীর পূত্র আরিফুল ইসলাম ওরফে আফি(৪৮)।

আদালত সূত্রে জানায়, ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ রাত ১২টায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামার উপজেলার গোডাউন মোড় নামক স্থানে দৌলতপুর থেকে ছেড়ে আসা কুষ্টিয়াগামী একটি ট্রাক থামিয়ে তল্লাশিকালে আসামী ট্রাক ড্রাইভার আরিফুল ইসলাম আফিকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ট্রাকের চালক সীটের উপরস্থ ছাদের সাথে আটকানো তিনটি প্যাকেটে ১৩০ গ্রাম হিরোইন উদ্ধারসহ ড্রাইভারকে আটক এবং পরবর্তীতে আটককৃত আসামী আরিফুল ইসলাম আফিসহ ৪জনের বিরুদ্ধে এসআই তরিকুল ইসলাম বাদি হয়ে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১)(খ) ধারায় মামলা দায়ের পূর্বক ভেড়ামারা থানায় সৌপর্দ করেন।

কুষ্টিয়া জজ কোর্টের সকরারী কৌশুলী এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, ভেড়ামার থানয় দায়েরকৃত ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১)(খ) ধারার এই মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৪সালের ২৯জুন আসামী আরিফুল ইসলাম আফির বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন পুলিশ। আদালত আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন শেষে দীর্ঘ স্বাক্ষ্য শুনানী করে রুবেলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমানিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত এই রায় ঘোষনা করেন। এই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামী ইয়াকু আলী, মো: ছোটন ও মো: লালনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদের বে-কশুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

উল্লেখ্য সাম্প্রতিক কুষ্টিয়ার আদালতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে করা মামলা নিষ্পত্তির বিষয়ে বেশ গতি পেয়েছে। ইতোপূর্বেও আরও কয়েকটি মামলায় জড়িত অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় আসামীদের যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। তবে সবগুলি মামলার ক্ষেত্রের বিজ্ঞ আদালতের পর্যবেক্ষনীয় মন্তব্যে আসামীদের পক্ষে বলা হয়েছে- “গঠিত অভিযোগ পাঠ করে শুনানো হলে আসামীগণ নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন। অত:পর রাষ্ট্রপক্ষ হতে স্বাক্ষ্য উপস্থাপন করা হয়। স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারা মতে পরীক্ষা করা হলে আসামীগণ পুনরায় নিজেদের নির্দোষ দাবি করে সাফাই স্বাক্ষী দেবে না বলে জানায়। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের স্বাক্ষীগণকে জেরা করার ধরন হতে আসামীদের পক্ষের মামলা সম্পর্কে যে ধারণা পাওয়া যায় তা সংক্ষেপে এরূপ যে, আসামীদের দখল ও নিয়ন্ত্রন হতে কোন মাদক উদ্ধার হয়নি। পরিত্যক্ত আলামত দিয়ে তাদের এ মামলায় জড়িত করা হয়েছে”। এমামলায় আসামীপক্ষের কৌশুলী ছিলেন, এ্যাডভোকেট হাসানুজ্জামান হাসু, আজিজুল হক এবং সুব্রত কুমার চক্রবর্তী(স্টেট ডিফেন্স)।

বিজ্ঞ আদালতের এই বিচারিক পর্যবেক্ষন বিষয়ে বিজ্ঞ সরকারী কৌশুলী অনুপ কুমার নন্দী বলেন, সর্বগ্রাসী মাদকাগ্রসন থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করতে হলে মাদকের সাথে সরাসরি যারা ব্যবসা ভিত্তিক জড়িত বা মাদকের গডফাদার যারা তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনা জরুরী। এক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট আরও অনেকগুলি সংস্থা রয়েছে তাদের মধ্যে আরও নিবির সমন্বয়ী ভুমিকা থাকা জরুরী। তাহলেই কেবল মাদককে জিরো টলারেন্সে নির্মূলে কাংঙ্খিত লক্ষে পৌছানো সম্ভব।

[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।