নিজস্ব সংবাদদাতা, বগুড়া;  প্রতিটি ইউনিয়নে ক্রয় কেন্দ্র খুলে সরকার নির্ধারিত দামে সরাসরি উৎপাদক কৃষকের নিকট থেকে ধান ক্রয়, মোট উৎপাদিত বোরো ধানের ২০% অর্থ্যাৎ ৪০ লাখ টন ধান সরকারি উদ্যোগে ক্রয়, কৃষক কৃষি বাঁচাতে, করোনা ক্ষতি কাটাতে ঋণ নয়, কৃষককে নগত অর্থ সহায়তা দেওয়া, কৃষি ঋণ প্রণোদনা প্যাকেজ সুদ মুক্ত করাসহ কৃষকদের নানা দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন করেছে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট।

আজ বৃহস্পতিবার (০৭ মে ২০২০) সকাল ১১ টায় বগুড়ার সাত মাথায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে এই মানবন্ধন করে কৃষক সংগঠনটি;

মানববন্ধনে প্রতিটি ইউনিয়নে ক্রয় কেন্দ্র খুলে সরকার নির্ধারিত দামে সরাসরি উৎপাদক কৃষকের নিকট থেকে ধান ক্রয়, মোট উৎপাদিত বোরো ধানের ২০% অর্থ্যাৎ ৪০ লাখ টন ধান সরকারি উদ্যোগে ক্রয়, কৃষক কৃষি বাঁচাতে, করোনা ক্ষতি কাটাতে ঋণ নয়, কৃষককে নগত অর্থ সহায়তা দেওয়া, কৃষি ঋণ প্রণোদনা প্যাকেজ সুদ মুক্ত করা , বর্গা চাষি, ভূমিহীন চাষিদের ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে নীতিমালা তৈরি করা, করোনা বিধ্বস্ত অর্থনীতি চালু করতে আগামী বাজেটে কৃষি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া, সার, বীজ, সেচ কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণে সরকারি সহায়তা দেওয়ার দাবি করেন নেতৃবৃন্দ।

মানববন্ধন কালে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট জেলা সভাপতি অ্যাড সাইফুল ইসলাম পল্টু, বাসদ জেলা সদস্য সচিব সাইফুজ্জামান টুটুল, বাসদ জেলা সদস্য মাসুদ পারভেজ, শ্যামল বর্মন, রাধা রানী বর্মন প্রমুখ।

মানববন্ধন থেকে জানানো হয়, বৈশ্বিক মহামারি করোনা আমাদের দেশেও জীবন ও জীবিকাতে মারাত্মক আঘাত হেনেছে। দেশের মোট শ্রম শক্তির ৫৪% কৃষিতে নিয়োজিত।জিডিপির প্রায় ১৪% আসে কৃষি থেকে। তারপরও বরাদ্দের দিক থেকে এই খাত বাজেটে অবহেলিত। কোভিড ১৯ এর কারণে সারাদেশে সাধারণ ছুটির ফলে সবকিছু দেড় মাস বন্ধ আছে। পরিবহন বন্ধ থাকায় কৃষক শাক-সবজিসহ কৃষি পণ্য বিপনন করতে পারছে না। এতে একদিকে উৎপাদক কৃষক দাম পাচ্ছে না অন্যদিকে ভোক্তা সাধারণ বাড়তি দামে সবজিসহ সবকিছু কিনতে বাধ্য হচ্ছে। সারাদেশে জুন মাসের মধ্যে বোরো মৌসুমের ধান কাটা মারা শেষ হবে। বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ কোটি ৪ লাখ ৩০ হাজার টন সেখানে মাত্র ৮ লাখ টন ধান এবং সাড়ে ১১ লাখ টন চাল কেনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এতে কৃষক নয় লাভবান হবে চাল কল মালিক, চাতাল মালিক, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী, ফরিয়া মধ্যসত্ত্বভোগীরা। কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে মোট উৎপাদিত ধানের ২০% অর্থ্যাৎ ৪০/৪২ লাখ টন ধান সরকারি উদ্যোগে ক্রয় করা জরুরী। সরকার মন প্রতি ১০৪০ টাকায় ধান কেনার কথা থাকলেও এখনো সেই ধান ক্র‍য় করা শুরু না করায় বাজারে তা ৫০০/৫৫০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

বীজ, সার, সেচ, কীটনাশকের দাম দফায় দফায় বাড়ছে, অথচ কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। কৃষি ভিত্তিক শিল্প নির্মাণের দাবি উপেক্ষিতই থেকে গেছে। গ্রামীণ কৃষিজীবী- শ্রমজীবী, ক্ষেতমজুর-দিনমজুরদের সারা বছরের কাজের কোন নিশ্চয়তা নাই। তার উপর করোনা সংক্রমন পরিস্থিতি গ্রামীন জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছে। ত্রাণ নিয়ে চলছে দূর্নীতি-চুরি লুটপাট। কাজেই কৃষক, ক্ষেতমজুর, দিনমজুর হত দরিদ্র মানুষদের বাঁচাতে উপরোক্ত দাবিগুলো বাস্তবায়ন করার দাবি জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।

আমাদের বাণী ডট কম/০৭ মে ২০২০/এবিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।