নিজস্ব সংবাদদাতা, কুষ্টিয়া; জেলার খোকসা-জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিদ্যুত কুমারের বিরুদ্ধে শিক্ষিকার  শ্লীলতাহানির অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। চলতি মাসের গত রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০) অভিযোগের তদন্তের দ্বিতীয় দফার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওই শিক্ষিকার দাবি, অভিযোগটি প্রত্যাহারের জন্য তাকে চাপ দিচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল।তবে তদন্ত কমিটি অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী দুই শিক্ষকেরই দায়ী করে তাদেরকে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার প্রস্তাব দিয়েছে।

ঐ  বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের নৈতিক পদস্খলন এর বিষয়ে তদন্ত কমিটির ২১ দিনের মাথায় গতকাল  সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০) বিকালে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মৌসুমী জেরীন কান্তা এর কাছে। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহি অফিসার তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক ভাবে দুই শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করেছেন বলে স্থানীয় সাংবাদিকদে জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খোকসা-জানিপুর সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার শিক্ষক বিদ্যুত কুমার দাসের বিরুদ্ধে একই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন। বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর গত ৩ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন ওই শিক্ষিকা।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দিচ্ছেন তিন সদস্য
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দিচ্ছেন তিন সদস্য। ছবি; আমাদের বাণী

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।  শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়েরের দশ দিনের মাথায় গত বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টায় তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজমূল হকের দপ্তরে অভিযোগকারী ওই শিক্ষিকার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। ওই দিন তিনি প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে জবানবন্দি দেন। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় দফায়ও তিনি শুনানিতে অংশ নেন। নিজের দায়ের করা অভিযোগের বিষয়ে তিনি অনড় ছিলেন।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজমূল হক বলেন, তদন্ত পূর্বক ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভিডিও অডিও ও মৌখিক বর্ণনা দুই পক্ষের কাছ থেকেই নিয়ে তা পর্যালোচনা করে সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব আকারে আমরা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহি অফিসার মৌসুমী জেরীন কান্তা জানান, তদন্ত কমিটির দেওয়া তথ্য ও প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককেই বিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করা হয়েছে এবং নিয়োগ বোর্ডের কাছে তাদের বিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তবে যা কিছু করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ নিরেপক্ষ অবস্থান থেকে করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য গত ৩ ফেব্রুয়ারি যৌন হয়রানির অভিযোগ করে খোকসা জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মনিরা সুলতানা উপজেলা নির্বাহী বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।