মো: নিয়ামুল কবির; জাতি গঠনের মূল কারিগর হলো প্রাথমিক শিক্ষকরা। আর গুণগত শিক্ষার মাধ্যমে একটি জাতি উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। একটি সমাজ গঠনে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম। এ কারণে শিক্ষককে জাতি গঠনের কারিগর বলা হয়। আলোকিত মানুষ তৈরি করার মাধ্যমেই কেবল গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি মুক্ত দেশ গঠন সম্ভব।

  • শিক্ষকরাই ভবিষ্যৎ নাগরিক তৈরি করেন। একজন শিক্ষক তৈরি করতে পারেন একজন ভাল ডাক্তার, প্রকৌশলী, বিচারক, প্রশাসক ও রাজনীতিবিদ। এ কারণে প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকা খুবই জরুরী। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রচুর শিক্ষক সংকট। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া ইউনিয়নের ২১৪ নং বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ২০১২ সালে স্থাপিত হয়।

শুধু শিক্ষক সংকটের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জাতির জনকের নামের বিদ্যালয় যদি এই অবস্থা হয় তাহলে জাতির পিতাকে অবজ্ঞা করা হয়। যার ফলে নিয়মিত পাঠদান হয় না এবং ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যায় না। ফলে অকালে ঝড়ে যাচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও সদর উপজেলার ১৫৭ নং পার-চন্দ্রদিঘলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিন জন শিক্ষক রয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ২/৩ জন শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে আরো অনেক বিদ্যালয় সেখানে প্রধান শিক্ষক নেই। এসব শিশুদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে শিক্ষকরা।

  • তাই আমরা ২০১৮ সালে ২৪ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মাঝে থেকে লিখিত পরীক্ষায় ৫৫২৯৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছি যা মোট পরীক্ষার্থীর শতকরা ২.৩ ভাগ। ১৮ হাজারকে চূড়ান্তভাবে সুপারিশ করা হয়। আমরা বাকি ৩৭০০০ চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হইনি। মাননীয় ডিজি মহোদয় মো: ফসিউল্লাহ স্যার বলেন, ভাইভাতে কোন পাশ ফেল নেই, উপস্থিত হলেই ১৪/১৫ নম্বর পাওয়া যায়। তাই ভাইভাতে যদি পাশ ফেল না থাকে তাহলে আমরা সবাই কোয়ালিফাইড। তাছাড়া আমরা গত চার বছরে মাত্র একটি সার্কুলার পাই। অন্যদিকে আমাদের অনেকেরই আবার চাকরির বয়স শেষ। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবতার মায়ের কাছে আমাদের আকুল আবেদন এই যে, আমাদের ৩৭ হাজার প্রার্থীকে প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ দিয়ে মুজিববর্ষকে স্মরণীয় করে রাখবেন।

অপরদিকে করোনার মাধ্যমে যে শিক্ষা সংকট তৈরি হয়েছে তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্যানেলে নিয়োগই হচ্ছে উত্তম পন্থা। আরেকটি সার্কুলার শেষ করতে প্রায় দেড় থেকে দুই বছর সময় লেগে যায়। ফলে শূন্যপদ শূন্যই থেকে যায়। তাই আর দেরি না করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক ২০১৮ প্যানেলে নিয়োগ দিয়ে বেকার সমস্যা দূর করুন।

লেখক, উপদেষ্টা,  প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক নিয়োগ ২০১৮ প্যানেল প্রত্যাশী, গোপালগঞ্জ জেলা কমিটি

আমাদের বাণী ডট কম/০৪ জুন ২০২০/সিসিপি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।