ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা;   বাংলাদেশে মহামারি করোনা ভাইরাস ঠেকাতে অধিক সংক্রমিত এলাকা চিহ্নিত করে রেড-ইয়োলো জোনে ভাগ করার সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে মারাত্মক বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন নাগরিকরা।

  • রেড ও ইয়োলো জোন চিহ্নিত করন সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না এলেও রেড জোন চিহ্নিত এলাকাগুলোতে সরকারি নির্দেশাবলী যথাযথভাবে নিশ্চিতের উদ্দেশে সেনা টহল জোরদার করা হচ্ছে বলে গতকালই জানিয়ে দিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। আর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, রেড জোনে সাধারণ ছুটি থাকবে।

এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, ঢাকায় রেড জোন এলাকা চিহ্নিত করে দেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারপর তিন থেকে পাঁচদিনের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

  • তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ আজ (বুধবার) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান, জোনভিত্তিক রেড-ইয়োলো ঘোষণা এবং সেখানে লকডাউন বাস্তবায়নের বিষয়ে শিগগিরই বিভ্রান্তির অবসান হবে। সংক্রমিত এলাকা পুরোপুরি লকডাউন হবে কিনা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. লেনিন চৌধুরী বলেছেন, বড় একটি এলাকা নিয়ে লকডাউন করতে হবে এবং এর মাঝে মাঝে অধিকতর সংক্রমিত ছোট ছোট পকেটগুলি আরো শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

  • তবে, ছোট ছোট এলাকা নিয়ে লকডাউন কোনো কাজে আসবে না বলে মত দিয়েছেন সরকার সমর্থক স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)-এর সভাপতি ইকবাল আর্সলান। তিনি বলেছেন, পুরো একটা সিটিকে লকডাউন করতে হবে। ছোট ছোট জায়গা পকেট করে কোনো লাভ হবে না।

ইকবাল আর্সলান বলেন, সম্প্রতি লকডাউন সংক্রান্ত যে সকল আলোচনা, সিদ্ধান্ত এবং কার্যক্রম সেগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে এর মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। তাহলে এই যে সমন্বয়হীনভাবে ছোট ছোট এলাকা বা জোনভিত্তিক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এটা আমাদের কতটুকু সুরক্ষা নিশ্চিত করবে? এ ব্যাপারেও আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

  • ডা. ইকবাল আর্সলান আরও বলেন, আমাদের দুটো বিষয় মনে রাখতে হবে। একটি হলো- সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এখনও আমরা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছি না। সংক্রমণ রোধে যে সকল সামাজিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রয়োজন সে বিষয়গুলো নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণেরও সহযোগিতা এবং দায় আছে। কিন্তু জনগণ সহযোগিতা করছে না। কারণ আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছবি এবং ভিডিও ফুটেজে দেখতে পাচ্ছি- সাধারণ লোক যারা বাইরে ঘুরছেন তারা ঠিকমত মাস্ক ব্যবহার করছেন না। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে যে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখাচ্ছে সেগুলো কতটুকু প্রতিপালন করছেন সে ব্যপারেও আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। সূত্র; পার্স টুডে 

এদিকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (১৭   জুন ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৩ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ১৩০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৪  হাজার ৮ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৮   হাজার ৪৮৯ জনে। করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ হাজার ৯২২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৭ হাজার ৫২৭টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো পাঁচ লাখ ৫১ হাজার ২৪৪ টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও চার হাজার আটজনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৮ হাজার ৪৮৯ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪৩ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ৩০৫ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও এক হাজার ৯২৫ জন। সব মিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা এখন ৩৮ হাজার ১৮৯ জন।

আমাদের বাণী ডট কম/১৮  জুন ২০২০/পিপিএম 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।