যেসব ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা শুধুমাত্র পাশ না করার কারনে কিংবা জিপিএ ফাইভ না পাওয়াতে আত্মহত্যা করল! এর কারণগুলো সত্যিকার অর্থে কি হতে পারে? কোন দুনিয়ায় আছে যে রেজাল্ট এর পরপর এইভাবে গণহারে আত্মহত্যা র খবর ডেইলি নিউজে কভারেজ হয়??

আমাদের আশেপাশের সমাজ ব্যবস্থা এতটাই অসুস্থ ধারার তুলনামূলক আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়ে উঠেছে যে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরাও তা আঁচ পেয়েছে! কথিত আশানুরূপ ফলাফল না হলেই তাদের একটাই ভয় সমাজের সবাই আমাকে আড় চোখে দেখবে, আমার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে।

একপ্রকার ভয় নিয়ে আমাদের লেখাপড়া করতে হয়। এমনকি এইভাবেই চলে আসছে কালের পরিক্রমায়, আর আশানুরূপ না হলেই প্রচণ্ড কষ্ট নিয়ে অদ্ভুত ঘৃণিত এক প্রথা যেভাবেই হউক এই জীবন আর রাখবে না এই মনোভাব নিয়ে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হচ্ছে!

এর পেছনের কারণগুলো খুব করে আমলে নেওয়া উচিৎঃ- আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমনভাবে অগ্রসর হচ্ছে যেখানে জিপিএ ফাইভ এর একপ্রকার অসুস্থ দৌড় প্রতিযোগিতা বললেও দোষ হবে না!

#জিপিএ ফাইভ না পেলে ভালো কলেজে পড়া সম্ভব না,
#জিপিএ ফাইভ না পেলে এই বুঝি ধ্বংস হয়ে গেলাম,
#পাশের বাসার ভাবী আর চাচাদের কথা তো বাদ ই/

জীবনে যদি কিছু করার ইচ্ছা থাকে, কোনমতে পাশ করেও তা করা যায়, লক্ষপূরন না হলেও তার কাছাকাছি যাওয়া যায়! তাই বলে আত্মহত্যা করব! প্রকৃতপক্ষে ছাত্রছাত্রীদের এই ধরনের বুঝ আসলে তাদের মাথায় গেথে দেওয়া হয়েছে, যে জিপিএ ফাইভ মানেই হল সবকিছু! বরং তাদের মাথায় দেওয়া উচিৎ ছিল নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাওয়া। জীবনের চলার পথে জিপিএ ফাইভ পাওয়া না পাওয়া কোন বাধাই হতে পারে না, যদি তোমার ইচ্ছা থাকে।

আমাদের মূল সমস্যা বা গোঁড়ায় যেই গলদ তা হলঃ- সবসময় আমরা খালি নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করেই ক্ষান্ত হই না পারলে টিপ্পনিও মারি প্রতিনিয়ত। পরীক্ষায় ফেইল করলেই আত্মহত্যা করতে হবে? ফেইল করা কি তাহলে মহাপাপ! এই পৃথিবী তে কি কেউই ফেইল করে নি! এই চিন্তা ভাবনাগুলো কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের মনে গেথে দেওয়ার পরিবর্তে যা দেওয়া হচ্ছে তা হলঃ- তুমি যদি জিপিএ ফাইভ না পাও তুমি শেষ!, তাহলে লোকে কি বলবে? এই ভয়েই তারা শেষমেস ফেইল করে বসে, কারন একধরনের অসুস্থ মানসিক চিন্তা তাদের মাথায় সবসময় কজ করতে থাকে। এর থেকে বের হয়ে আসা কি উচিৎ না? পরিত্রান এর উপায়ও খুবই সহজ।

এইধরনের প্রতিযোগিতামূলক অসুস্থ মানসিকতা থেকে যতদিন আমরা বের হয়ে না আসতে পারব ততদিন পর্যন্ত আমাদের এই আত্মহত্যার প্ররোচনা কখনোই থামবে না, বরং ভয়ানক পরিনতি হবে। কথায় আছে সংগ্রামী জীবন ই হল শ্রেষ্ঠ জীবন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।