ত্রিদেশীয় সিরিজে জিম্বাবুয়েকে ৩৯ রানে হারিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয় পেল বাংলাদেশ। টসে হেরে মাহমুদউল্লার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের তুলে ১৭৫ রান। যেটি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান। এরপর প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। টাইগার বোলিং তোপে ১৩৬ রানেই গুটিয়ে যায় মাসাকাদজার দল। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে ফাইনালে গেল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে বিদায় নিল এক ম্যাচ আগে। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর ত্রিদেশীয় সিরিজের আরেক ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে লিটন দাসের সঙ্গে ওপেনিংয়ে জুটি গড়েছেন প্রথমবার টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে লিটনের বিরুদ্ধে আইন্সলি এনলোভু জোরালো এলবিডাব্লিউর আবেদন করেন। আম্পায়ার তানভির আহমেদ তাতে সাড়া না দিলেও রিভিউ নেয় সফরকারীরা। তাতে সফল হয়নি, বরং রিভিউ হারায় জিম্বাবুয়ে।

এরপর নাজমুলকে নিয়ে ঝড়ের গতিতে এগোতে থাকেন লিটন দাস। ওপেনিং জুটিতে এসেছে ৪৯ রান। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে জারভিসের স্লোয়ার ডেলিভারীতে ফিরতি ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফেরেন নাজমুল। বিদায়ের আগে নিজের ঝুলিতে পুরেছেন মাত্র ১১ রান। নিজের টেস্ট অভিষেকে করেছিলেন ১৮। ওয়ানডেতে সাত।

পরের ওভারে ক্রিস্টোফার এমপোফুর বলে নেভিল মাদজিভার দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরতে হয়েছে লিটনকেও। ২২ বলে চারটি চার ও দুটি ছয়ে ৩৮ রান করেন এই ওপেনার।

দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় এই সিরিজে আজকের ম্যাচেও নিজের চেনা পারফরম্যান্স করতে পারেননি দলনেতা সাকিব। প্রথম ম্যাচে ১ রান, দ্বিতীয় ম্যাচে ১৫ রান করার পর তৃতীয় ম্যাচে আউট হয়েছেন মাত্র ১০ রানে।

৬৫ রানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরালেন মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিম। দুজনের জুটিতে এসেছে ৭৮ রান। দলীয় ১৪৩ রানে আউট হন মুশফিক। ইনিংসের ১৭তম ওভারে উইকেটের পেছনে ধরা পড়ার আগে মুশফিক করেন ২৬ বলে তিন চার আর এক ছক্কায় ৩২ রান।

১৯তম ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে চতুর্থ ফিফটির দেখা পান রিয়াদ। একই ওভারে আফিফ হোসেন (৮ বলে ৭) উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। রিয়াদ শেষ ওভারে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি সীমানায় ধরা পড়েন। তার আগে ৪১ বলে করেন ৬২ রান। তার ইনিংসে ছিল একটি চার আর পাঁচটি ছক্কার মার। পরের বলেই কাইল জারভিস বিদায় করেন ২ রান করা মোসাদ্দেক হোসেনকে। সাইফউদ্দিন ৬ এবং অভিষিক্ত আমিনুল ইসলাম ০ রানে অপরাজিত থাকেন। কাইল জার্ভিস ৩টি এবং ক্রিস্টোফার এমফোপু নেন ২ উইকেট।

১৭৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। সাইফউদ্দিন ফিরিয়ে দেন ব্রেন্ডন টেইলরকে। পরের ওভারে সাকিব বোল্ড করেন রেগিস চাকাভাকে। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে আক্রমণে এসেই শফিউল ইসলাম ফিরিয়ে দেন শন উইলিয়ামসকে। দলীয় ৩ রানেই তিন উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।

ইনিংসের সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে এসেই টিনোটেন্ডা মুতুমবাজিকে আউট করেন অভিষিক্ত লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম। প্রথম ওভারে মাত্র ৩ রানে ১ উইকেট শিকার করেন আমিনুল।

বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে ছিলেন রায়ান বার্ল। জিম্বাবুয়ের এ তারকা ক্রিকেটার বুধবার ব্যাটিংয়ে নেমেই শফিউলের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত করেন।

৩৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে যাওয়া জিম্বাবুয়েকে খেলায় রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যান অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। জিম্বাবুয়ের এ ওপেনারকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত করেন আমিনুল। রান আউট হয়ে ফেরেন নাভিল মাদজিভা।

৬৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যাওয়া দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখান রিচমন্ড মুতুমবামি। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে গর্তে পড়ে থাকা দলকে খেলায় ফিরিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখান। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এই তারকা ব্যাটসম্যানকে তৃতীয় শিকারে পরিনত করেন শফিউল ইসলাম। তার আগে ৩২ বলে চারটি চার ও তিন ছক্কায় ৫৪ রান করেন মুতুমবামি। তার ফিফটিতে ১৩০ রানে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তুলতে সক্ষম হয় জিম্বাবুয়ে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।