বসত বাড়ীর ৪ শতক জমি বিক্রি করে আওয়ামীলীগের কাউন্সিলে একটি ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছিলেন জিয়াউল হক। তার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী ছিলেন আরও ৫ জন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীর কাছে হেরে গেছেন মাত্র ২৮ টি ভোটে। প্রার্থী হওয়া আ.লীগ নেতা ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ৫নং দুওসুও ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের জিয়াখোর গ্রামের বাসিন্দা।

গত মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উপজেলার দুওসুও উচ্চ বিদ্যালয়ে উৎসব মূখর পরিবেশে স্থানীয় ওয়ার্ড আ.লীগের নেতারা এ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে সভাপতি পদে আব্বাস আলী ও সাধারণ সম্পাদক পদে বাবুল হোসেন নির্বাচিত হয়েছে।। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মধ্যে ওই প্রার্থীর ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জন বিভিন্ন মন্তব্যও করেছেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল নিজস্ব ওয়ালে এ ছবি পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন “ভিটেবাড়ীর ৪ শতক জমি বিক্রি করে ,, ৫ নং দুওসুও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলে,,#জিয়ারুল_হক সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হয়েছেন এবং ভোট চলছে…”পোস্ট করার পর অনেকেই মন্তব্য করেছেন তাকেই নির্বাচন করা উচিত। অনেকেই মন্তব্য করেছেন টাকা দিয়ে মানুষের ভালবাসা পাওয়া যায়না। আরেকজন মন্তব্য করেছেন আগে বিষয়টি জানলে আমি বাধা দিতাম। জমি বিক্রি করে কাউন্সিলে প্রার্থী হতে হবে, এটা কেমন বিষয়।

দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে জিয়াউল আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত। দলের প্রতি অগাধ ভালবাসা এবং নেতৃত্ব দেবার সৎইচ্ছার জন্যই তিনি এমন কাজ করেছেন। আবার অনেকেই বলছেন, টানা তৃতীয় আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর চলমান ওয়ার্ড কাউন্সিলে দলীয় পদ পাবার আশায় মরিয়া হয়ে উঠেছে দলটির নেতাকর্মীরাসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে আ.লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন থেকে পদত্যাগ করে ওয়ার্ড কাউন্সিলের প্রার্থী হয়েছেন প্রায় ৫০ জনের উপর নেতাকর্মী। সিনিয়র রাজনীতিবীদরা বিষয়টি খারাপ ভাবেই নিচ্ছেন।

তারা বলছেন, অঙ্গ সংগঠনের একটি গুরুত্ব পূর্ণ পদ খালি করে মূল দলে আসছে। এতে ওই জায়গাটি ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন কর্মসূচীতে নেতাকর্মী সংকট দেখার আশংকা করছেন তারা।জানতে চাইলে জিয়াউল হক জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নকে আরও ত্বরান্তিত করতে কাজ করার ইচ্ছা ছিল। সে জন্য ভিটেবাড়ীর জমি বিক্রি করে ওয়ার্ড কাউন্সিলে ৫নং দুওসুও ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদকের প্রার্থী হয়েছিলাম।

দুওসুও ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার আলী মুঠোফোনে বলেন, জমি বিক্রি করে প্রার্থী হয়েছেন বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে উৎসব মূখর পরিবেশে কাউন্সিল হচ্ছে। একই মন্তব্য করেছেন উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকপ প্রবীর কুমার রায়।

দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউন্সিলের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠানে ঠাকুরগাঁও জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সুজন, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কুমার রায়, ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি প্রভাত রায়, সাধারণ সম্পাদক আকতার আলী প্রমুখ উপস্থিথ ছিলেন। উল্লেখ যে, দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশের ন্যায় ঠাকুরগাঁও জেলার ৫টি উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ডে চলছে আ.লীগের ওয়ার্ড কাউন্সিল। স্থানীয় আ.লীগ নেতাদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করা হচ্ছে সভাপতি ও সম্পাদক।

বিশেষ করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ওয়ার্ড কাউন্সিলকে ঘিরে চলছে প্রচার, প্রচারণা, মাইকিং। আ.লীগ কাউন্সিল ভোটের ন্যায় উৎসব মুখর পরিবেশের রূপ নিয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।