ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৬ জন রোগী। আক্রান্ত রোগীর বেশিরভাগ ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে সদর হাসপাতালে প্যাথলজিকাল পরীক্ষা নিরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাইরে থেকেই করতে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা। অপরদিকে আতঙ্কে রয়েছেন হাসপাতালে ভর্তি থাকা অন্যান্য রোগীরাও।

মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা: এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম  বিষটি নিশ্চিত করেছেন।

হাসপাতালের তথ্য মতে,গত ২৮ জুলাই থেকে শুরু করে ২৯ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৬ জন ডেঙ্গু রোগী আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এদের মধ্যে তিনজন রোগীর অবস্থার উন্নতি হলে বাড়ি ফিরেন তারা। কিন্তু এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে আরও তিনজন।

আক্রান্ত রোগীরা হলেন, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার উত্তর বঠিনা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে সুমি আক্তার(২৪),পীরগঞ্জ উপজেলার ভবেশ রায়ের ছেলে পোশাক শ্রমিক স্বপন রায়(২১), পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর গ্রামের শাহ আলমের ছেলে পোশাক শ্রমিক পাইলট(২০)।

চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরত যাওয়া রোগীরা হলেন, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বামুনিয়া গ্রামের দমিজুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম(১৯),সদর উপজেলার ফকদনপুর গ্রামের রতিশ বর্মনের ছেলে শহর বর্মন(১৯) ও দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ এলাকার খাইরুল ইসলামের ছেলে রুবেল (৩০) ।

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সুমি আক্তারের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘তার মে ঢাকার পান্থপথ এলাকায় থাকতেন। হঠাৎ ১৮ জুলাই শরীরে প্রচণ্ড জ্বর অনুভব করলে পরীক্ষার মাধ্যমে জানতে পারি সে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। পরে তাকে গ্রামে নিয়ে আসা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ২৯ জুলাই ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মেয়েকে।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত স্বপন রায়ের ভাই বকুল রায় জানান, ঢাকায় কাজ করতেন তার ভাই স্বপন। হঠাৎ করেই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয় ছোটভাই। পরে তাকে বাসায় নিয়ে আসার পর ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু এখানে ডেঙ্গু সনাক্তকরণের কোনো প্যাথলজিকাল পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। তাই রোগী ও তাদের স্বজনদের বাইরে থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। যদি এই হাসপাতালে এসব ব্যবস্থা থাকতো তাহলে হয়তো এতো সমস্যা হতোনা।

আরিক হোসেন নামের এক রোগী জানান, আমি এসেছি আমার বাবাকে। শুনেছি এই রোগীদের যদি কোনো মশা কামড় দেয় আর সেই মশা যদি আমাদের অন্য কাউকে কামড় দেয় তাহলে আমাদেরও ডেঙ্গু হবে। তাই হাসপাতালে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ যাতে করে এই ডেঙ্গু রোগীদের একটু ভালো করে দেখে শুনে রাখেন।

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ৬জন ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফেরত গেছে। অবশিষ্ট ৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।’

হাসপাতালে পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি না থাকার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কোনো ডেঙ্গু রোগীর পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য সরকারি ফি’য়ের অতিরিক্ত টাকা কেউ যেন না নেয় সেজন্য জেলা শহরের প্যাথলজি এবং ক্লিনিক মালিকদের সঙ্গে নিয়ে সভা করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।