নাটোরের গুরুদাসপুরে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির ছেলের অঙ্ক পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় শিক্ষকদের লাঞ্ছিতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত স্কুল সভাপতির নাম বেনজির আহম্মেদ।

গত রোববার সকালে উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগে জানা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলের অঙ্ক পরীক্ষা ভালো না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে আস্ফালন করে তিন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন বিদ্যালয়ের সভাপতি বেনজির আহম্মেদ।

শুধু তাই নয়, নিজের অপরাধ আড়াল করতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাছে কিছু শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মারপিট ও পরীক্ষার প্রশ্নপত্র জটিল করার পাল্টা মৌখিক অভিযোগও করেন তিনি।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, সভাপতির ছেলে ফুয়াদ হোসেন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। শনিবার তার অঙ্ক পরীক্ষা হয়। ক্লাসের অন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ভালো হলেও ফুয়াদের পরীক্ষা ভালো হয়নি বলে সভাপতি ক্ষুব্ধ হয়ে সকালে বিদ্যালয়ে এসে আস্ফালন শুরু করেন।

একপর্যায়ে সহকারী শিক্ষক বিপ্লব রানাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে চেয়ার উঁচিয়ে মারার চেষ্টা করেন। তার এ ধরনের আচরণের কারণ জানতে আরেক শিক্ষক জিয়াউল হক এগিয়ে এলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দসহ হুমকি দেন।

বেনজির আহম্মেদের আস্ফালনে প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুন এগিয়ে এলে তাকেও অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে টেবিলে থাকা কাঁচি ও চাকু হাতে নিয়ে প্রধান শিক্ষককে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন ওই সভাপতি। একই সঙ্গে তার ছেলের পরীক্ষা খারাপ হওয়ার ব্যাখ্যা জানতে চান বিদ্যালয়ের সভাপতি বেনজির আহম্মেদ।

প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরেই বেনজির আহম্মেদ সব শিক্ষকের সঙ্গে নানাভাবে খারাপ আচরণ করছেন। রোববারের ঘটনাটি শিক্ষকদের জন্য হুমকি ও অপমানজনক ছিল। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি। সভাপতি নিজের অপকর্ম আড়াল করতেই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন। প্রতিকার পেতে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

এদিকে বেনজির আহম্মেদ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘শিক্ষকদের মারধর করিনি। পরীক্ষার হলে শিক্ষক বিপ্লব রানা তার ছেলেকে মারধর করেছে। এতে তার ছেলের পরীক্ষা খারাপ হয়েছে। কারণ জানতে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়েছে।’

প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষকদের অভিযোগ পাওয়ার পর একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে ওই বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তিনি প্রতিবেদন দাখিল করলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।