নাটোর জেলার সিংড়া শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা দিচ্ছে কিশোর রাসেল। পরীক্ষার কক্ষে সবাই বেঞ্চে বসে একমনে খাতায় লিখে যাচ্ছে প্রশ্নের উত্তর। তাদের পাশে বসে লিখছে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রাসেল মৃধা (১৪)। তার হাতে কলম নেই, টেবিলের ওপর নেই পরীক্ষার খাতাও।

বিশেষ কৌশলে বেঞ্চের ওপর খাতা রেখে সেখানে বসেই ছোট্ট বাম পায়ের দুই আঙুলের ফাঁকে কলম রেখে মনোযোগ দিয়ে লিখে যাচ্ছে সে। শারীরিক প্রতিবন্ধিকতা দমাতে পারেনি তাকে।

সে সিংড়া পৌর শহরের শোলাকুড়া মহল্লার দিনমজুর কৃষক আব্দুর রহিম মৃধার ছেলে। তার এই অদম্য স্পৃহা শিক্ষক, সাংবাদিকসহ সবাইকে বিস্মিত করেছে।

স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, শুধু একটি ছোট্ট পা দিয়েই তার জীবন সংগ্রাম। সে পা দিয়ে লেখে এবং শুকনো খাবার খায়। লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ আর মনের জোরে বাম পায়ে কলম ধরে সে পরীক্ষা দিচ্ছে। আর শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও হাল ছাড়েননি রাসেলের বাবা-মা। তাকে স্থানীয় শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেন।

রাসেলের মা লাভলী বেগম জানান, তার দুটি সন্তান নিয়ে তিনি সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবন্ধী এই ছেলের বেঁচে থাকার জন্য একটি কর্মই তাদের আশা। সরকারি সহায়তা পেলে রাসেলকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবেন।

শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার কেন্দ্র সচিব মো. নাজমুল হক বলেন, শুধু ছোট্ট একটি পা দিয়ে পরীক্ষা দেয়াটা সবাইকে বিস্মিত করে তুলেছে। তার জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ অতিরিক্ত সময়ও বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

সিংড়া উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ও কেন্দ্র তদারকি কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ পাল বলেন, ছেলেটির হাত ও একটি পা না থাকা সত্ত্বেও ছোট্ট একটি পা দিয়ে সুন্দরভাবে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে। তার অদম্য ইচ্ছশক্তি সবাইকে মুগ্ধ করেছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।