৪ সেপ্টেম্বর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারাস অডিটরিয়ামে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আয়োজিত,আসুন দুর্নীতিবাজ মুখোশধারীদেরকে ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ।

 

 

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশ বরন্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন দু’ধরণের। এক হল বাই চয়েস মানে স্বেচ্ছায় যারা যুদ্ধে গিয়েছিলেন আর দ্বিতীয়টি হল বাই চান্স বা ঘটনাচক্রে মুক্তিযোদ্ধা। জিয়াউর রহমান ছিলেন ঘটনাক্রমে মুক্তিযোদ্ধা। আর আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছি তারা মৃত্যুকে জেনে নিয়েই গিয়েছি।

দুর্নীতিবিরোধী অভিযান বিষয়ে তিনি বলেন, আমার ভয় হয়। কারণ বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের মার্চ মাসে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমার কৃষক দুর্নীতি করে না, আমার শ্রমিক দুর্নীতি করে না, দুর্নীতি করে ‘শিক্ষিত্’ লোক। তিনি তাদের ‘শিক্ষত’ বলেন নাই, বলেছেন ‘শিক্ষিত্’। ২০% শিক্ষত লোকের মধ্যে ৫% লোক দুর্নীতি করে। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন। তারপর আর তাকে বাঁচতে দেওয়া হয় নাই। আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও যখন দুর্নীতি বিরোধী অভিযান শুরু করেছেন তখন ষড়যন্ত্রকারীরা বসে নেই। ষড়যন্ত্র যে হচ্ছে না- এ কথা আমরা কেই বলতে পারব না।

সভাপতির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সিনেট সদস্য ড. আ ক ম জামাল উদ্দিন বলেন আমরা এতদিন দুর্নীতিবাজদের কুশপুত্তলিকা বানিয়ে তাদেরকে ডাস্টবিনে ফেলেছি। আমরা আর দুর্নীতিবাজদের কুশপুত্তলিকা বানাব না। আমরা তাদের ঘর থেকে ধরে এনে বঙ্গপসাগরে ফেলে দেব। আমরা তাদের অবৈধ টাকা ছিনিয়ে এনে সেই টাকা জনগণের মাঝে বিলিয়ে দেব। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধকে আমরা দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে নিলাম। তিনি আরো বলেন আমরা কোটা বিরোধী আন্দোলন প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছি। কোটা বিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অপশক্তিকে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়াতে দেইনি। আগামীতেও বাংলাদেশের কোথাও আমরা তাদের দাঁড়াতে দেব না।

 

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের সঞ্চালনায় ঢাবি শাখার সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন তাদের অনুষ্ঠানে এমপি-মন্ত্রীদের অতিথি করে না সে বিষয়ে আপনারা নানা সময়ে প্রশ্ন করে থাকেন। আজ আমি আপনাদের সেই বিষয়টি জানাতে চাই। জননেত্রী শেখ হাসিনা সংসদে একদিন বলেছেন, তিনি ছাড়া বাকি সবাইকে কেনা যায়। তার মানে হল সকল এমপি-মন্ত্রীকে কেনা যায় অর্থাৎ তারা দুর্নীতিগ্রস্থ। তাই মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আগামীতেও কখনোই এমপি-মন্ত্রীদের অনুষ্ঠানে অতিথি করবে না।

 

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম- আহ্বায়ক রেজা আলী ,শরিফুল ইসলাম শুভ, আল-আমিন মাসুম, মাসুদ রানা, আমিনুল ইসলাম, রাব্বি হাসান শাওন,ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ইউনিটের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক সহ বিভিন্ন ইউনিটের সাংগঠনিক নেতৃবৃন্দ এই সময় উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ৯ টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচি পালন শুরু হয়। বিকাল ৩ টায় দুর্নীতি বিরোধী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৮ টায় ডাকসু ক্যাফেটেরিয়াতে এক বিশেষ নৈশ ভোজের মধ্য দিয়ে শেষ হয় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ১ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান।

আমাদের বাণী/আ-আ-মা

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।