পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে ইসমাইল হোসেন জিসান রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ে মোটরবাইক চালিয়ে পড়ালেখার খরচ চালাতেন। শ্যামলীর রোড নং-০২ এর ১৬/ডি বাসায় বন্ধুর সঙ্গে থাকতেন। তিনি গাজীপুর জেলার গাছা থানার কাথোরা গ্রামের সাব্বির হোসেন শহীদের ছেলে। তার মা ভাতের হোটেলের দোকান দিয়ে সংসার চালান। নিজের টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার বাইরেও সংসারে টাকা দিতেন জিসান।

বাইকের লোভে আত্মনির্ভরশীল সেই ছেলেটিকে হত্যা করা হয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। অপহরণের পর তাকে হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয় ঘাতক। জিসানের লাশ উদ্ধারের পর গ্রেফতার হাসিবুল হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন।

গলায় দঁড়ি পেচিয়ে জিসানকে হত্যার কথা জানিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী দিয়েছেন হাসিবুল। রোববার ঢাকার সিএমএম কোর্টের বিচারক আতিকুল ইসলামের আদালতে হাজির হয়ে সে ওই জবানবন্ধী দেন হাসিবুল। পুলিশ এ ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামী হাসিবুরের স্ত্রী সজনী ও তার বন্ধু শ্রাবন শাওনকেও গ্রেফতার করেছে।

শেরেবাংলা থানার এসআই সুজা নূর জানান, গত ১২ মে থেকে নিখোঁজের ঘটনায় ২৩ মে গাজীপুরের কামারজুরি এলাকা থেকে হাসিবুর রহমান নামে এক যুবককে আটক ও তার কাছ থেকে নিখোঁজ জিসানের মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যে একই দিন ওই এলাকার জনৈক জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে জিসানের লাশ উদ্ধার করা হয় এবং এ ঘটনায় জড়িত অপর আসামী হাসিবুরের স্ত্রী সজনী ও তার বন্ধ শ্রবন ওরফে শাওনকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরো জানান, জিসানের লাশ উদ্ধারের ৪দিনের মাথায় রোববার গ্রেফতারকৃত হাসিবুর ঢাকা, সিএমএম কোর্টে হাজির হয়ে আদালতকে জানান, তিনি ও অপর দুই সহযোগী মিলে জিসানকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করা হয়। পরে নিজ ঘরে জিসানের গলায় দঁড়ি পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার ভাড়া বাসার সেপটিক ট্যাংকে লাশ গুম করে।

জিসান রাজধানীর ইউরোপিয়ান ইউনিভারসিটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বষের ছাত্র ছিলেন। তিনি পড়ালেখার পাশাপাশি রাইড শেয়ারিং পাঠাও চালাতেন। পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে তিনি পাঠাও চালিয়ে পড়ালেখার খরচ চালাতেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।