পুকুর পুনঃখনন প্রকল্পের ১৬ কর্মকর্তার বিদেশ সফরের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের ৩ মাস পর ৮ ডিসেম্বর প্রকল্পটির প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

এর মধ্য দিয়ে অনুমোদন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) ‘পুকুর পুনঃখনন ও ভূ-উপরিস্থ পানি উন্নয়নের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচে ব্যবহার’ প্রকল্পে এমন ঘটনা ঘটছে।

এতে অভিজ্ঞতা অর্জনের নামে দুই ব্যাচে ১৬ কর্মকর্তার বিদেশ সফরে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয় হবে।

১৬ কর্মকর্তার বিদেশ সফরের বিষয়টি নতুন করে দেখার সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা সচিব মো. নূরুল আমিন। বুধবার তিনি বলেন, একনেকে প্রকল্পটি পাস হলেও অনেক সময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রয়োজন মনে না করলে কর্মকর্তাদের বিদেশে নাও পাঠাতে পারে।

আবার অনেক সময় বিদেশ সফরের ফাইল প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির জন্য গেলেও তা ফেরত আসে।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক লিড ইকনোমিস্ট ও অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ নদী-নালা-পুকুরের দেশ। এদেশে ঘুরলেই পুকুর পুনঃখনন ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব।

এত টাকা খরচ করে পুকুর খননের অভিজ্ঞতা নিতে বিদেশে যাওয়ার আয়োজন হাস্যকর। যা সরকারি অর্থের অপচয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, একনেকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়ার সময় মেয়াদ সংশোধনসহ কিছু শর্ত দেয়া হয়েছিল। এগুলো পূরণ করতেই অনেক সময় লেগে গেছে। কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এখন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু হবে। এক্ষেত্রে বিদেশ সফর করার প্রক্রিয়া শুরু হওয়াটাই তো স্বাভাবিক।

সূত্র জানায়, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ১২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয় হবে। ২৭ আগস্ট একনেক সভায় অনুমোদিত প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়- ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এর আওতায় ১৬ কর্মকর্তা অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড বা নেদারল্যান্ডস যে কোনো একটি দেশ সফর করতে পারেন।

প্রথম পর্যায়ে আটজন ও পরবর্তী পর্যায়ে আট কর্মকর্তা এ সফরে যাবেন। আটজনের মধ্যে চারজন করে বিএমডিএর প্রকৌশলী আর বাকি চারজন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা থাকবেন। প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ বুধবার যুগান্তরকে বলেন, বিদেশ সফরের বিষয়টি তার মনে নেই।

সূত্র জানায়, রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া ও নাটোর জেলার ৪৩টি উপজেলার বরেন্দ্র অঞ্চলে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত কম। সেচকাজে মূলত ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহৃত হয়। তবে এ প্রবণতা কমাতে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

এর অংশ হিসেবে প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্পে ৭১৫টি পুকুর ও ১০টি দিঘী পুনঃখনন, ৮৫টি সৌরচালিত লো লিফট পাম্প স্থাপন, ৮০টি ভূ-গর্ভস্থ সেচনালা নির্মাণ, ৮৫টি প্রিপেইড মিটার ক্রয়, ৯ হাজার মিটার ফিতা পাইপ ক্রয় এবং দেড় লাখ বৃক্ষরোপণ করা হবে। সূত্র: যুগান্তর

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।