প্রাথমিকে অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। তারই ধারাবহিকতায় ঢাকা মহানগরী ও পূর্বাচলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই হাজার ৯৭৫ শ্রেণিকক্ষ ও সাড়ে আট হাজার প্রাচীর নির্মাণ করা হবে। আর এক হাজার ১৬৭ বিদ্যালয়-কক্ষ ও ২৫ হাজার ৫৩৬ প্রাচীর মেরামত করা হবে। সাজানো হবে ৩৫৬ দেয়াল।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘ঢাকা মহানগরী ও পূর্বাচলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দনকরণ’ নামে একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করবে। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। এতে খরচ হবে এক হাজার ১৫৯ কোটি ২০ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।

এ প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাট, মাস্টার প্ল্যান প্রস্তুত ও মাটি পরীক্ষাকরণ, নতুন ১৪ বিদ্যালয়ও (উত্তরা তিনটি ও পূর্বাচলে ১১) নির্মাণ করা হবে। কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক ক্রয়, অফিস সরঞ্জামাদি ক্রয়, আসবাবপত্র সরবরাহ ইত্যাদি করা হবে।

শতভাগ ভর্তি ও শিশুর মানসিক বিকাশ ঘটানো নিশ্চিত করা, শিক্ষায় প্রবেশাধিকার, উচ্চশিক্ষা ও পরিপূর্ণ উন্নতির ধারাবাহিকতার মাধ্যমে সামাজিক বৈষম্য কমানো এবং প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থীর জন্য শিশুবান্ধব শিক্ষা গ্রহণের পরিবেশ নিশ্চিতকরণসহ শিক্ষার মান বৃদ্ধি করা হবে।

প্রকল্পের যৌক্তিকতায় বলা হয়েছে, বর্তমানে মহানগরীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। অনেক বিদ্যালয়ের নিজস্ব জায়গা বেদখল রয়েছে। জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস চলছে। শিক্ষার্থীদের তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা কম। আসবাবপত্র ব্যবহারের অনুপযোগী। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত, সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেই। নেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা এসব বিদ্যালয়ে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করে সামাজিক বৈষম্য কমানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি জরিপ করে। সে জরিপ থেকে তৈরি প্রতিবেদনের আলোকে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ঢাকা মহানগরীর ৩৪২টি এবং উত্তরা ও পূর্বাচলের ১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং দৃষ্টিনন্দন করার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।