টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বড়চওনা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ ও প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষে শিক্ষকদের তালাবদ্ধ করে রেখেছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সখীপুর-সাড়রদিঘী সড়কের বড়চওনা বাজারে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে শিক্ষকদের তালাবাদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকার নেওয়ার জন্য ইচ্ছে করে ফেল করানো হয়েছে এছাড়াও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মিয়া ৫০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম পূরণের কথা বলে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছে বলে জানিয়েছে সড়ক অবরোধকারী শিক্ষার্থীরা। উপজেলার বড়চওনা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালের এসএসসি’র নির্বাচনী পরীক্ষায় নতুন ও পুরাতন মিলে ১০৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এদের মধ্যে ১২জন নির্বাচনী পরীক্ষায় কৃতকার্য হয় এবং বাকি ৯৩ জনই এক থেকে একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। এতে করে ওই বিদ্যালয়ের ১২ জন পরীক্ষার্থী বাদে বাকি ৯৩ জনের ফরম পূরণের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ফলে অকৃতকার্য ৯৩ জন পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এ বিষয়ে খবর পেয়ে সখীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আয়শা জান্নাত তাহেরা ও ওসি (তদন্ত) এএইচ এম লুৎফুল কবির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন এবং শিক্ষকদের মুক্ত করেন। এসময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) আন্দোলনরত অকৃতকার্যকারী শিক্ষার্থীদের দাবি মোতাবেক তাদের সামনে খাতা পুনরায় মূল্যায়ন করা হবে এমন আশ্বাস দিলে আন্দোলন তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, নির্বাচনী পরীক্ষায় ১০৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নিলেও প্রধান শিক্ষক অকৃতকার্যদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের কৌশল হিসেবে মাত্র ১২ জনকে পাস করিয়েছেন। কোনো কোনো শিক্ষার্থী এক বিষয়ে পাস নম্বরের চেয়ে এক বা দুই কম পেলেও তাদেরকে শুধু টাকা আদায়ের জন্য অকৃতকার্যের তালিকায় রেখেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মিয়া তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক নয়। তাদের খাতা সঠিকভাবেই মূল্যায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ফরম পূরণের নামে নেয়া সকল টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্তকর্তা মফিজুল ইসলাম জানান, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের নিয়ম মোতাবেক নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের ফরম পূরণের কোনো সুযোগ নেই।

এ প্রসঙ্গে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুর রহমান জানান, প্রধান শিক্ষক ফরম পূরণের আশ্বাস দিয়ে নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকলে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও টাকা নিয়ে থাকলে তাকে আদায়কৃত টাকা ফেরত দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।