বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বের ‘বসন্তকাল’ চলছে৷ কিংবা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে কাজ করছে দুই দেশের সরকার—এমন সব কথার ফুলঝুড়ি হরহামেশাই শোনা যায়৷ কিন্তু বাস্তব চিত্রটা ভিন্ন৷

এতো ‘বন্ধুত্বের’ পরও দুই দেশের সীমান্তকে রক্তপাতমুক্ত করা যাচ্ছে না কিছুতেই৷ আর সবক্ষেত্রে ভিকটিম বাংলাদেশি নাগরিক৷ ২০১৯ সালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে অন্তত ৪৩ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। যা গত বছরের তুলনায় এ বছর নিহতের সংখ্যা অনেক বেশি।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এই প্রতিবেদনটি আজ (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

বেসরকারি সংস্থাটির বার্ষিক হিসাবে, ২০১৮ সালে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা ছিলো ১৪। এ বছর তা বেড়ে ৪৩-এ দাঁড়িয়েছে।

নিরস্ত্র মানুষদের নিহত হওয়ার ঘটনাগুলোকে ‘ঠাণ্ডা মাথায়’ হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করে আসক’র প্রতিবেদনে বলা হয়, “নিহত ৪৩ বাংলাদেশির মধ্যে ৩৭ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বাকিদের নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে।”

সংস্থাটির দেওয়া তথ্যে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের হাতে ৪৬ বাংলাদেশির নিহত হওয়ার অভিযোগ উঠে। ২০১৬ সালে সেই সংখ্যা কমে ৩১ এ দাঁড়ায়। ২০১৭ সালে তা আরও কমে দাঁড়ায় ২৪ এ।

এর আগে গত ১১ জুলাই একাদশ জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, ২০১৮ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে বিএসএফের হাতে নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা ২৯৪ জন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য এম হারুনুর রশিদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এই তথ্য জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদকে জানান, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ২০০৯ সালে অন্তত ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫ জন, ২০১১ ও ২০১২ সালে ২৪ জন করে মোট ৪৮ জন, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮ জন, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন ও ২০১৮ সালে ৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।