বগুড়ায় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার  (১৮ জানুয়ারি ২০২০) শহরের প্রধান প্রধান সড়কে মিছিল শেষে সাতমাথায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সভাপতি সাইফুজ্জামান টুটুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা মাসুদ পারভেজ, সহ-সভাপতি শিব শংকর শিবু, সংগাঠনিক সম্পাদক আবু রায়হান, দপ্তর সম্পাদক শ্যামল বর্মন, প্রচার সম্পাদক সানোয়ার বাবু, সদস্য আলমগীর হোসেন আফাল

সভাপতির সুচনা বক্তব্যে শ্রমিক নেতা সাইফুজ্জামান টুটুল বলেন- স্বাধীনতার ৪৯ বছরে এসে দেশের উন্নয়নের নানা বয়ান প্রতিদিন প্রচারিত হচ্ছে অথচ এই উন্নয়ন আর অগ্রগতির নিয়ামক শক্তি শ্রমিক তাদের ন্যায্য মজুরি এখনও নিশ্চিত হয়নি। ১০২টি প্রাতিষ্ঠানিক শিল্পখাতের অন্তত ৬২টিতে ঘোষিত মজুরি কাঠামো নেই। রপ্তানি আয়ের প্রধান খাতের গার্মেন্টস শ্রমিরা ন্যূনতম মজুরি ১৮ হাজার টাকা দাবি করছে দাবির অর্ধেক বেতনও তাদের দেয়া হয়নি। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে মজুরির কোন ন্যূনতম নীতিও নেই। শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক শ্রম আইনের দাবি উপেক্ষিত। যতটুকু আইন আছে তারও কার্যকারিতা নেই। শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতির জন্য নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র তাও প্রদান করা হয় না। কাজ করতে এসে প্রতিবছর হাজার হাজার শ্রমিক মৃত্যুবরণ করে কিন্তু তাদের কর্মক্ষেত্রে জীবনের নিরাপত্তা নেই, কর্মক্ষেত্রে নিহত-আহত হলে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা আর পুনর্বাসনের দাবি উপেক্ষিত।

শ্রমিক নেতা মাসুদ পারভেজ বলেন- শ্রমিকরা দেশের শিল্প বা কারখানা বাঁচিয়ে রাখতে সংগ্রাম করে জীবন দিচ্ছে; তারা তাদের সকল জীবনীশক্তি ক্ষয় করে উৎপানের চাকাকে সচল রাখছে, উন্নয়নের গতিকে ধরে রাখছে কিন্তু তারা মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে পারছেন। তাদের থাকার ঘর নেই, তিন বেলা মানসম্মত খাবার জোটে না, তাদের রেশনের দাবি উপেক্ষিত। চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল নাই, তাদের সন্তানের লেখাপড়ার কোন ব্যবস্থা নেই।

সমাবেশে অন্য নেতৃবৃন্দ বলেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট তার জন্মলগ্ন থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক সকল খাতের শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন করার সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। শ্রমিক ফ্রন্ট মনে করে আন্দোলন সংগ্রামের পথেই গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, ন্যায্য মজুরি, ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার আদায় ও সুবিধাবাদী ট্রেড ইউনিয়নের বিপরীতে বিপ্লবী ধারার ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেখানে শ্রমিকদের সমস্যা সেখানেই সংগঠন এবং আন্দোলন গড়ে তুলে দাবি আদায় করতে হবে। আর এই শ্রমিক আন্দোলন জোরদার করতে নেতৃবৃন্দ শ্রমিক ফ্রন্টের পতাকাতলে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।