গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা হাডুডু। আধুনিক যুগের কর্ম ব্যস্ততায়ও ভাটা পড়েনি মানুষের এ খেলার প্রতি আগ্রহের। তাইতো সুযোগ পেলেই মানুষ দলে দলে ছুটে আসে অতি প্রিয় এ খেলাটি দেখতে। যদিও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে গ্রামীণ জনপদে এ খেলাটির আয়োজন খুব একটা দেখা যায় না। হারিয়ে যেতে বসা এ খেলাটিকে নিয়ে ৮ দলীয় টুর্ণামেন্টের আয়োজন করেছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার মরহুম শামসুল হক সরকারের পরিবার।

ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধকালীন তৎকালীন ফুলবাড়ী থানা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক সরকারের স্মৃতিকে নতুন প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরতে এ টুর্ণামেন্টের আয়োজন করেছে তার পরিবার। হাডুডু খেলাকে প্রধান আকর্ষণ করে ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন টুর্ণামেন্ট চলছে একই সাথে। পক্ষকাল ব্যাপী রাত্রিকালীন এ টুর্ণামেন্ট ১২ জানুয়ারি থেকে চলছে উপজেলার কাছারী মাঠে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬ টায় শুরু হয় খেলা। জনপ্রিয়তার কারণে হাডুডু খেলা অনুষ্ঠিত হয় সবার শেষে। হাডুডু খেলা দেখতে প্রতিদিন ভীর করে কয়েক হাজার দর্শক। উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসছে হাডুডু খেলা দেখতে। খেলার উত্তেজনায় দর্শকরা সমস্বরে চিৎকার করে উঠছে তাদের পছন্দের খেলোয়াড়ের সফলতায়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে প্রতিটি দর্শকের মাঝে। হাডুডুকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় কাছারী মাঠে জমে উঠছে উপজেলার মানুষের প্রাণের মেলা।

ভুরুঙ্গামারী, জলঢাকা, আদিতমারীসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা খেলোয়াড়দের ক্রীড়াশৈলী দেখতে প্রতিদিন হাজারো দর্শক হাজির হচ্ছে কাছারী মাঠে। টুর্ণামেন্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মরহুম শামসুল হক সরকারের বড় ছেলে উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী সরকার বলেন, আমার বাবা ছিলেন একজন ক্রীড়ামোদী মানুষ। হাডুডু খেলার প্রতি তার ছিল প্রবল টান। তিান ছিলেন মুজিবের সৈনিক। তাই মুজিব বর্ষের প্রাক্কালে তার স্মরণে জনপ্রিয় এ খেলার আয়োজন ।

হাডুডু খেলার পরিচালক ফুলবাড়ী জছিমিঞা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী বলেন, হাডুডু এ জনপদের প্রিয় একটি খেলা। আমি নিজেও দীর্ঘ ১৫ বছর হাডুডু খেলেছি। শামসুল হক সরকারের পরিবার বিলুপ্তপ্রায় এ খেলাটির আয়োজন করায় প্রাণের টানেই আমি এর সাথে জড়িত হয়েছি। মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করছে কত জনপ্রিয় তাদের হাডুডু খেলা।

খেলা দেখতে আসা শিমূলবাড়ীর আফছার আলী বলেন, এ ধরণের আয়োজন এখন নাই বললেই চলে। তাই আমার মতো সবাই দূর দূরান্তর থেকে প্রতিদিন খেলা দেখতে আসে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।