মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন স্কুলের দিদিমণি। তাও আবার বিয়ের মাত্র মাস চারেক পরেই। এবং ছুটি শুরু দ্বিতীয় দিনের মাথায় তিনি সন্তান প্রসব করেন।

এতেই চটে গিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ওই শিক্ষিকার উপরে বেজায় ক্ষিপ্ত স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরাও। সেই কাড়নে ছুটি শেষ হয়ে গেলেও কাজে যোগ দিতে পারছেন না ওই শিক্ষিকা। সেই সঙ্গে দোসর হয়েছে, স্কুলের শিক্ষিকা এবং অভিভাবকদের অপমান। এ খবর দিয়েছে কলকাতা২৪।

এই ধরণের প্রবল প্রতিকূল অবস্থার মাঝে দাঁড়িয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই শিক্ষিকা। থানায় জানানোর আগেই স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। কারণ স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশ মানতে নারাজ স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং স্কুলের প্যারেন্ট টিচার অ্যাসোসিয়েসন বা পিটিএ।

ঘটনাটি দক্ষিণের রাজ্য কেরলের। যে রাজ্যের শিক্ষার হার দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুনলায় সবথেকে বেশি। এই শিক্ষার হারের সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়েই রাজনৈতিক চর্চা হয়েছে দিন কয়েক আগেই। এই অবস্থায় স্কুল শিক্ষিকা নিগ্রহের এই ঘটনা যেন প্রশ্ন চিহ্ন তুলে দিল সেই শিক্ষার হার নিয়ে। শিক্ষা থেকে চেতনা আসে এবং বিপ্লব ঘটে। বাম ছাত্র সংগঠন এই মিতাদর্শ মেনে চলে। আর কেরলে এখনও বাম রাজত্ব বর্তমান রয়েছে।

চলতি সপ্তাহের বুধবার কেরলের কোত্তাক্কাল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের কিরেছেন ওই শিক্ষিকা। সরকার অনুমোদিত একটি প্রি-প্রাইমারি স্কুলের ওই শিক্ষিকা অভিযোগ করেছেন যে, গত পাঁচ বছর ধরে তিনি ওই স্কুলে চাকরি করছেন। প্রথম বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পরে তিনি গত বছরের জুন মাসে দ্বিতিয় বিয়ে করেন। সেই দ্বিতীয় বিয়ে করার আগে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলে দীর্ঘদিন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিবাহবিচ্ছেদ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই ওই শিক্ষিকা তাঁর দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন। সেই সময়ের ঘনিশঠতার কারণেই তিনি সন্তান সম্ভবা হয়ে যান। এরপরে গত বছরের অক্টোবর মাসে তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটির আবেদন করেন। ছুটি নেওয়ার দ্বিতীয় দিনের মাথায় তিনি সন্তান প্রসব করেন। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও তিনি স্কুলে যোগ দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষিকা।

এই বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়তেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে মামলা। খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কোত্তাক্কাল থানার সাব ইনস্পেক্টর সন্ধ্যা দেবী।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।