আকতার হোসেন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা;  জেলার মিরসরাইয়ে এক স্কুল ছাত্রীর (১৫) করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামের ওই রোগী অলিনগর এল.বি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী। তাকে ফেনী ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

আজ বুধবার (০৬মে ২০২০) দুপুর ৩টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিনের নেতৃত্বে ওই রোগীর বাড়িসহ কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করেছেন। মিরসরাইয়ে এ পর্যন্ত ৩ জনের শরীরে করোনা সনাক্ত হয়েছে।

জানা গেছে, গত সোমবার (৪মে) করোনার উপসর্গ জ্বর সর্দি দেখা দেয় ওই কিশোরীর। চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন ফেনী জেলার করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র ফেনী ট্রমা সেন্টারে। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর আজ জানা যায় ওই কিশোরী সংক্রমিত হয়েছে। খবর পেয়ে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় করেরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন ওই এলাকায় গিয়ে লকডাউনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন। এসময় চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়নের পক্ষ থেকে ওই যৌথ পরিবারটির জন্য পুরো একমাসের খাবার রসদ প্রদান করা হয়। পরিবারটির নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখার জন্য একজন গ্রাম পুলিশ সদস্য নিয়োজিত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন জানান, আমার ইউনিয়নে একজন করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে। সতর্কতার অংশ হিসেবে ওই পরিবারটিকে ইউএনও মহোদয়ের উপস্থিতিতে লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। এজন্য তাদেরকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও রসদ সরবরাহ করেছি। তিনি সকলকে হোমকোয়ারিন্টাইনে থাকার জন্য এবং ইউনিয়নের সকল জনগনকে জরুরী প্রয়োজন ব্যতিত বাড়ির বাইরে না যেতে অনুরোধ করছি।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, ওই মেয়ের বাবা চট্টগ্রামে সিএন্ডএফ এজেন্সিতে চাকুরী করেন। সে সূত্রে তিনি চট্টগ্রামে আসা যাওয়ার মধ্যে রয়েছেন। ধারনা করা হচ্ছে বাবার মাধ্যমেই সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারে সে। আগামীকাল পরিবারের বাকি সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। ওই পরিবারটি সহ পাশ্ববর্তী কয়েককটি পরিবারকে লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে ।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৮ এপ্রিল খইয়াছড়া ইউনিয়নের নিজতালুক গ্রামে রাজিয়া সুলতানা নামের এক মহিলা ও গত ২৮ এপ্রিল মিঠানালা ইউনিয়নের পাত্তারপুকুর এলাকায় এক গাড়ি চালকের শরীরে করোনা সনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে রাজিয়া সুস্থ হয়ে গত মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেছেন। অন্যজন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

 স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (০৬ মে ২০২০)  তথ্য অনুযায়ী,  করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ছয় হাজার ৭৭১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ছয় হাজার ২৪১টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৯৯ হাজার ৬৪৬টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ৭৯০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি গতকালের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৭১৯ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও তিনজন। এ নিয়ে মোট ১৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আমাদের বাণী ডট কম/ ০৬ মে ২০২০/ডিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।