লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা; জেলার  রায়পুরে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ১৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খোঁজ নিয়েছেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এবিএম মারুফ বিন জাকারিয়া। কিন্তু গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জানতে পারেন তিনি নিজেও করোনায় আক্রান্ত।

সারা দিনের কর্মব্যস্ততা ও দায়িত্ব পালন করে মারুফ তার ফেসবুকে রোববার রাত ৯টা ৫৪ মিনিটে করোনা রোগীদের সুস্থতা চেয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘আজ (রোববার) ১৮ জন করোনা রোগীর সঙ্গে কথা বলেছি। বিশ্বাস করেন, তাদের সামনে গিয়ে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কথা না বললে আপনি বুঝতে পারবেন না তাদের মানসিক অবস্থা। আশপাশের মানুষগুলো আমরা এমন অবস্থা সৃষ্টি করি, মনে হয় করোনা পজিটিভ রোগীগুলো কোনো হিংস্র প্রাণী। তাদের অনুরোধ, আমি যেন তাদের পাশে থাকি। সবাইকে বলে এসেছি, তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকা করতে। কাল সকালে আমি তালিকা এনে ক্রয় করে সেই মোতাবেক পৌঁছে দেব। ইয়াং ব্লাড এত ভয় পাই না। যতটুকু সচেতনতা অবলম্বন করা দরকার তা করি। সবাই দোয়া করবেন এই রোগীগুলো যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।’

তবে এর কিছুক্ষণ পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি জানতে পারেন নিজের দেওয়া নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ এসেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন বলেন, চারদিন আগে অ্যাডভোকেট এবিএম মারুফ বিন জাকারিয়ার নমুনা পাঠানো হয়েছিল। গতাকাল তার রিপোর্ট হাতে আসে। রিপোর্টে তিনি করোনায় আক্রান্ত বলে জানা গেছে। তিনি এখন নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুরের ৮১ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রায়পুরের আটজন ও সদর উপজেলার একজন রয়েছেন। রায়পুরের আক্রান্তদের মধ্যে চারজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, দুজন নার্স, একজন জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে আক্রান্তদের চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৯৯ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (১৭ মে ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা করা হয় আট হাজার ১১৪টি  নমুনা পরীক্ষা করে  এক হাজার ২৭৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ২৬৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১৪ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩২৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২৫৬ জন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন চার হাজার ৩৭৩ জন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে জানানো হয়, পুরুষ ১৩ জন ও নারী একজন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৯ জন ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচজন। ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা সিটির আছেন পাঁচজন। তাদের বয়স বিশ্লেষণে ১১-২০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১-৪০ একজন, ৫১-৬০ তিনজন, ৬১-৭০ তিনজন, ৭১-৮০ তিনজন ও ৮১-৯০ বছরের মধ্যে একজন।

আমাদের বাণী ডট কম/১৮ মে ২০২০/ডিএ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।