শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা;  বাগেরহাটের সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয় থেকে হরিণের মাংস ও চামড়া এবং জ্বালানী কাঠ পাচারের অভিযোগে তিন ব্যক্তিতে আটক করেছে বনরক্ষীরা।

আজ শনিবার (০২ মে ২০২০ ) বিকেলে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করে আটক ব্যক্তিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
পুর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই ঢাংমারী ষ্টেশনের বনরক্ষীরা পৃথক অভিযান চালিয়ে এ হরিণের মাংস ও চামড়া এবং বনজ কাঠ উদ্ধার করে। আর বনের এ অপরাধ প্রবনতার সঙ্গে খোদ বনরক্ষীরা জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে করোনার লকডাউনের ভেতরেও সুন্দরবনে হরিণ শিকারী ও অনুপ্রবেশকারীদের তৎপরতা কমছে না।

বনবিভাগ ও স্থানীয়রা জানান, ঢাংমারী ফরেষ্ট ষ্টেশন সংলগ্ন বোজনখালী এলাকার মোঃ মজিবুর রহমানের বাড়িতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বনরক্ষীরা সদ্য জবাইকৃত একটি চিত্র হরিণেন চামড়া আটক করে। অভিযোগ রয়েছে যে বাড়ি থেকে হরিণের চামড়াটি উদ্ধার করা হয়েছে ওই বাড়িতে জাপসি ফরেষ্ট টহল ফাঁড়ির রানা নামের এক বনরক্ষী ঘটনার আগের রাতে (বৃহস্পতিবার) অবস্থান ও হরিণ ভোজন করেন।

শুক্রবার বিকালে মজিবুরের ছেলে বেল্লাল ট্রলার যোগেই ওই বনরক্ষীকে তার কর্মস্থালে জাপসিতে পৌছে দেয়। আর দিনগত রাত ১১ টার দিকে বনরক্ষীরা ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হরিণের চামড়া উদ্ধার করে। এ সময় অভিযানে যাওয়া বনরক্ষীদের কয়েক ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে হরিণ শিকারী চক্রের সদস্যরা। এর ফলে হরিণ শিকারী চক্রের কাউকে আটক করতে পারেনি বনবিভাগ। আর এ ঘটনার জের ধরে শনিবার ভোর রাতে একটি ভাড়া চালিত ইঞ্জিন নৌকাসহ সোহাগ (২১) ও হানিফ মাঝি (৩৫) নামের নিরীহ দুই ব্যক্তিতে আটক ও মিথ্যা জ্বালানী কাঠ পাচারের অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করা হয়।

মোংলার ফুয়েল ঘাটে খোদ বনরক্ষীদের সামনেই কান্না ভেঙ্গে পড়েন ওই দুই যুবক। অভিযোগ করেন, তাদের ট্রলারটি থামিয়ে ঘাঘড়ামারী টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীরা দ্রুত ট্রলারের ভেতর কিছু জ্বালানী কাঠ ওঠায় এবং ঢাংমারী ষ্টেশনে জ্বালানী কাঠের সংকট রয়েছে বলে জানায়। পরে এ কাঠ পৌছে দিতে গেলে তাদের আটক করা হয়। এ ঘটনার দু’দিন আগে দিনে দুপুরে ৩ কেজি হরিণের মাংস সহ অনুপম বরমন নামে (চায়ের দোকানদার) এক ব্যক্তিকে আটক করে বনরক্ষীরা।

অভিযোগ রয়েছে হরিণ শিকারী চক্রের সদস্যরা পুর্ব শত্রুতার জের ধরে দোকানের পাশে পলিথিনে মাংস রেখে নিরীহ ওই ব্যক্তিকে ফাঁসিয়ে দেয়। সুন্দরবনের বনরক্ষীদের সঙ্গে হরিণ শিকারী চক্রের গভীর সখ্যতা থাকায় মূল অপরাধীরা ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। আর নিরীহ সাধারণ মানুষ ফেঁসে যাচ্ছেন বন অপরাধ মামলায়। এ নিয়ে এলাকাবাসির মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে এ বিষয় ঢাংমারী ষ্টেশনের ওসি ফরেষ্টার আনোয়ার হোসেন বলেন,বন অপরাধীদের নিয়ে তারা খুব চাপের মুখে আছেন। তাই সন্ধান পেলেই তারা অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছেন।

আমাদের বাণী ডট কম/০২ মে ২০২০/পিপিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।