নব্বই দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ, ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু, আলাদা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণসহ পাঁচ দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় আবারও রাজপথে নেমেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শনিবার তারা মানববন্ধন করেন। এ সময় তারা অনিশ্চিত ক্যারিয়ার থেকে উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন।

দাবি আদায়ে আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ঢাকা কলেজের ছাত্র আবু বকর বলেন, ঢাবি প্রশাসন আমাদের সঙ্গে প্রহসন করছে। দাবি আদায়ের আশ্বাস দিয়েও কোনো দাবি পূরণ করেনি। অনিশ্চিত ক্যারিয়ার থেকে উদ্ধারে আবারও রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি। আন্দোলনরত ছাত্র শাকিল বলেন, পূর্বপরিকল্পনা ছাড়াই ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়। এরপর থেকেই সাত কলেজে নেমে আসে কালো অধ্যায়। দীর্ঘ ৯ মাস ৭ কলেজের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। মানববন্ধন, অবরোধ কর্মসূচির পর কার্যক্রম শুরু করে। কিছুদিন চলার পর পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে যায়। তার পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ ও ২৪ এপ্রিল আন্দোলনের কারণে ঢাবি প্রশাসন ৫ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে আমরা ক্লাসে ফিরে যাই। কিন্তু প্রকাশিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা হতাশ জীবন কাটাচ্ছি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হল- পরীক্ষা গ্রহণের ৯০ দিনের মধ্যে ত্রুটিমুক্ত ফল প্রকাশ। অনার্স, মাস্টার্স, ডিগ্রির সব বর্ষে ফলাফলে অকৃতকার্য হওয়ার কারণ প্রকাশসহ খাতার পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। ৭ কলেজ পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, সিলেবাস অনুযায়ী মানসম্মত প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ উত্তরপত্র মূল্যায়ন সম্পূর্ণরূপে সাত কলেজের শিক্ষক দ্বারা করতে হবে। সেশনজট নিরসনে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশসহ ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু করতে হবে।

কর্মসূচি স্থলে ঢাবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক : এদিকে শনিবার শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি স্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আর দাবি তো আমার শাখাকে ঘিরেই বেশি। তাই তাদের কথা নিজ কানে শুনতে এসেছি। তাদের বক্তব্য ও দাবি থেকে কর্তৃপক্ষ ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফল তৈরি করা হতো ডিজিটাল পদ্ধতিতে। এ ক্ষেত্রে আমরা অবশ্য আধুনিকায়ন করছি। শিক্ষকরা খাতা দেখে ওএমআর ফরমে নম্বর জমা দেবেন। সেটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফল তৈরি করা হবে। এই অবস্থা প্রবর্তন করা গেলে কমপক্ষে দু’সপ্তাহ সময় বেঁচে যাবে। এক মাসের মধ্যে হয়তো সফটওয়্যারটি চালু করা সম্ভব হবে। এর সুফল শিক্ষার্থীরা পাবে। তিনি আরও বলেন, সময় বাঁচাতে বর্তমানে আমরা ৯০ শতাংশ উত্তরপত্র পরীক্ষার হল থেকেই বিতরণ করছি মূল্যায়নের জন্য। এর সুফলও শিক্ষার্থীরা পাবে। তবে ভালো ফলের জন্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই লেখাপড়া করতে হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।