কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় শোমসপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রশ্ন জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। যশোর বোর্ডকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে নিজের মতাদর্শ বাস্তবায়নে ও অর্থ লাভের আশায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইন উদ্দিন মাস্টার নিজের তৈরি করা প্রশ্ন দিয়ে গত মাসের ২৪ তারিখে ইংরেজি পরীক্ষায় ১০৭ নং কোর্সের পরীক্ষার নিয়েছে।

জানা গেছে এ ব্যাপারে স্থানীয় এলাকাবাসী খোকসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাফফারা তাসনীন এর কাছে লিখিত অভিযোগ করলে বিষয়টি তিনি আমলে নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে উত্তরপত্র বিদ্যালয় থেকে সংগ্রহ করা হয়। আরো জানা গেছে বাধ্যতামূলক অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া শিক্ষার্থীদের যে লেখাপড়া করিয়েছে সেই মোতাবেক বোর্ডের প্রশ্ন কমন না হওয়ায় বাধ্য হয়ে নিজে প্রশ্ন তৈরি করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীগণ।

বৃহস্পতিবার বিকেলে উক্ত প্রশ্নপত্র ও উত্তর পত্র উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিক্ষা অফিসার মিলায়ে দেখা যায় প্রশ্ন জালিয়াতির ঘটনার সত্যতা পাই।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার মুস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ইতিপূর্বে ছিল এখনো নতুন করে আবার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিষয়টি তদন্ত চলছে তদন্ত পূর্বক জানানো হবে। তবে ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশে আমরা পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর পত্রের খাতা সবকিছু জব্দ করে অফিসে রেখেছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাফফারা তাসনীন সাথে কথা বললে তিনি বলেন, তাৎক্ষণীক যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কে মোবাইল ফোনে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শনিবার দুপুরে যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এর কন্ট্রোল রুম থেকে আগন্ত কম্পিউটার ডাটাবেজ প্রধান কামাল এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম শোমসপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শন শেষে স্থানীয় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কারিগরি কার্যক্রমে ব্যবহারিত কম্পিউটার, প্রিন্টার সহ মেইল-ইমেইল ইন্টারনেট সহ সকল কার্যক্রম সচল রয়েছে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে কেন বোর্ডের প্রশ্ন ব্যতিরেকে অন্য প্রশ্ন নিয়ে পরীক্ষা দিলেন এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

এদিকে উল্টা করে প্রধান শিক্ষককে তিনি প্রশ্ন করলেন তাৎক্ষণিকভাবে আপনি প্রশ্ন কোথায় পেলেন? যদি পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক আগে প্রশ্ন না করে রাখেন। প্রধান শিক্ষক আইন উদ্দিন মাস্টার এর প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না পেরে দ্রুত বিদ্যালয় ত্যাগ করেন।

 শোমসপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইন উদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বোর্ডের প্রশ্নেই পরীক্ষা নিতে হবে এমন কোন বিধিবিধান নেই স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানই তাদের নিজস্ব প্রশ্নে পরীক্ষা নেবার ক্ষমতা দিয়েছে স্বয়ং শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বোর্ডের টিম আমার বিদ্যালয় আসলে আমি এগুলোই বলেছি তারা বলেছেন এতে কোন অসুবিধা নেই।

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রশ্ন ডাউনলোড করলেও অষ্টম শ্রেণির ইংরেজি ১০৭ নম্বর সেট কোড এর প্রশ্ন প্রিন্ট করা সম্ভব হয়নি, ফলতো নিজেদের তৈরি করা প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা নিতে বাধ্য হই। তবে এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহি অফিসার প্রশ্নপত্র এবং উত্তর পত্র সবকিছু স্কুল থেকে নিয়ে গেছে এ কথা তিনি স্বীকার করেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।