নিজস্ব সংবাদদাতা, গাজীপুর; জেলার শ্রীপুরের সাবেক এমপির এপিএসের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন স্বামীর ক্ষমতায় শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজের প্রভাষক পদে চাকরি পেয়ে সাত বছর ধরে কলেজে না গিয়ে ঢাকায় বসেই বেতনের টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত  ঐ শিক্ষিকা কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রভাষক এবং গাজীপুর-৩ আসনের সাবেক এমপি মরহুম আলহাজ অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলীর এপিএস জাহাঙ্গীর সিরাজীর স্ত্রী বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সহায়তায় হাজিরা শিটে একসঙ্গে স্বাক্ষর করারও। কিন্তু গত ১৫ মাস যাবৎ বর্তমান এমপি ইকবাল হোসেন সবুজ নির্বাচিত হওয়ার পর ঐ শিক্ষিকা এখন আর হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে পারছেন না। কারণ হিসেবে জানা যায়, ১৫ মাস যাবত্ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুন্নবী আকন্দ নিজেই কলেজে আসেন না। কিন্তু কলেজ থেকে প্রতি মাসে বেতনের টাকা তারা দুজনেই উত্তোলন করছেন।

আরও পড়ুন; একত্রে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির বৃত্তি, তথ্য পাঠানোর শেষ দিন ১২ মার্চ

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১১ জানুয়ারি শ্রীপুর রহমত আলী সরকারি কলেজের ঐ শিক্ষিকা যোগদান করেন। অভিযোগ উঠেছে, প্রতি মাসের বেতন-ভাতা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজেই উত্তোলন করে ঐ প্রভাষকের ঢাকার বাসায় পৌঁছে দিতেন এবং কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাজিরা খাতা ঐ শিক্ষিকার বাড়িতে নিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে আনতেন। কিন্তু গত ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ঐ হাজিরা শিটে তার কোনো স্বাক্ষর নেই। তবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বেতন নিয়ে তাকে পৌঁছে দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের হিসাব ও করণিক শাখার একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, সাবেক এমপি রহমত আলী ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তার এপিএস জাহাঙ্গীর সিরাজী ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ করান।

আরও পড়ুন; পাঠদান অনুমতি বাতিল হচ্ছে যে ১৫ কলেজের!

এ ব্যাপারে গত ১৫ মাস যাবৎ কলেজে না আসা এবং ঢাকায় অবস্থানরত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুন্নবী আকন্দের মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ‘আমি যত দিন কলেজে গিয়েছি, তত দিন ঐ শিক্ষিকা নিয়ম অনুযায়ী কলেজে যাওয়া-আসা করতেন এবং ক্লাসও করতেন। এখন আমি রাজনৈতিক কারণে কলেজে যেতে পারছি না, তাই কলেজে আমার অনুপস্থিতিকালে কী হচ্ছে না হচ্ছে আমি কিছুই জানি না। তবে প্রতি মাসের বেতনশিটে আমি নিয়ম অনুযায়ী স্বাক্ষর করি, যাতে শিক্ষকেরা তাদের বেতন নিতে পারেন।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিনের মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ‘আমি রেগুলার ক্লাস করি, খাতায় আমার স্বাক্ষর আছে।

আরও পড়ুন; বেসরকারি শিক্ষকদের পদোন্নতিতে বাতিল হচ্ছে অনুপাত প্রথা

’ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মেজবাহুল মাওলাবলেন, ‘আমার জানামতে, তিনি আজ অবধি একটি ক্লাসও করাননি। কিন্তু প্রতি মাসে বেতন নিচ্ছেন।’

জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি কলেজে আসেন না, অথচ প্রতি মাসে বেতন নেন এমন তথ্য সঠিক। এ ব্যাপারে আমি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখেছি, কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’

এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামছুল আরেফীন বলেন, ‘ঐ কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিনের বিষয়ে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে জেনে ব্যবস্থা নেব।

আমাদের বাণী ডট কম/১২ মার্চ ২০২০/টুএ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।