দিনাজপুর সংবাদদাতা; প্রেমিকের দেওয়া মোবাইল নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে গলায় থাকা ওড়না দিয়ে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া নিজ মেয়েকে হত্যা করেছে আপন ‘মা’। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর সহায়তায় ঘাতক মাকে আটক করেছে পুলিশ।

গতকাল রবিবার (১৪ জুন ২০২০)  গভীর রাতে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় বিনোদনগর ইউনিয়নের বড়মাগুড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

  • ঘাতক মোসা. রহিমা বেগম (৪৩) উপজেলার বিনোদনগর ইউনিয়নের বড়মাগুড়া গ্রামের মো. বুলু মিয়ার স্ত্রী। নিহত মেয়ে মোসা. ফাতেমা (১৩) ওই এলাকার বিনোদনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।

আজ সোমবার (১৫ জুন ২০২০) দুপুরে নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অশোক কুমার চৌহান  বিষয়টি গণমাধ্যমকে  নিশ্চিত করেছেন।

  • স্থানীয় বিনোদনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন বলেন, উপজেলার বড়মাগুড়া গ্রামের মো. বুলু মিয়ার স্ত্রী মোসা. রহিমা বেগম গত ১ সপ্তাহ আগে একই ইউনিয়নের পাঠানগঞ্জ গ্রামে মেয়ে ফাতেমাকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে গত তিন দিন আগে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। গতকাল রবিবার সকালে বাড়ির পাশে আমগাছ থেকে আম নামানোর সময় মেয়ে ফাতেমার কোমরে একটি (স্কিনটাচ) মোবাইল দেখতে পায় মা রহিমা বেগম। পরে মেয়েকে মোবাইলের বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়ে ফাতেমা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।

চেয়ারম্যান বলেন, ঘটনার পর মা ওই মোবাইল ফোনটি নিয়ে ঘরের শোকেসে তালাবদ্ধ করে পাশে গ্রামের বড় মেয়ের বাড়িতে চলে যান। এরপর বিকেলবেলা মেয়ের বাড়ি থেকে ফিরে শোকেসের তালা ভাঙা দেখে মেয়ে ফাতেমাকে আবারো জিজ্ঞাস করলে সে কোনো প্রত্যুত্তর দেয়নি। এরপর মা ও মেয়ের মাঝে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মেয়ের গলায় থাকা ওড়না দিয়ে টান দেয় মা। পরে সেখানেই মেয়ে ফাতেমা মারা যায়।

  • নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  অশোক কুমার চৌহান বলেন, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রাত ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার এবং ঘাতক মা রহিমা বেগমকে আটক করে থানায় আনা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজ মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও  বলেন, রাতেই মেয়ের চাচা মো. আলম হোসেন বাদী হয়ে মা রহিমা বেগমকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মেয়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘাতক মা রহিমা বেগমকে দিনাজপুর জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এলাকার কোন ছেলে ওই মেয়েটিকে মোবাইল ফোনটি দিয়েছে সেই বিষয়ে খোঁজ খরব নেওয়া হচ্ছে।

আমাদের বাণী ডট কম/১৫ জুন ২০২০/পিপিএম 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।