আগুনি জীবন কাব্য

জাহাঙ্গীর বাবু

আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন! অপরিকল্পিত
নগরায়ন! দাবানলের থাবায় নগর জীবন!
দায় কার! কেন এলাম এই মুখ -মুখোশের
ভন্ডের চিড়িয়াখানায়।
তামাশা দেখানোই কাজ,তামশায় হতে হয় লাশ!

আগুনের লেলিহান শিখা,ধোঁয়ার কুন্ডলী,
বাঁচার ব্যার্থ আকুতি,উচ্চ ইমারত
থেকে প্রাণে বাঁচার নিষ্ফল চেষ্টা!
প্রতিবার ফায়ার বিগ্রেড,যৌথ বাহিনীর
মানব প্রেমী সংখ্যা লঘু গুটি কয়েকের
প্রাণপণ লড়াই। ভয়ংকর মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট!
হরহামেশাই জ্বলে পুড়ে মরার,
হত্যাকান্ডের লজ্জার রাষ্ট্রীয় ইতিহাস!

প্রিয় জনের কাছে ক্ষমা চেয়ে
নিজেই দেখেছে নিজের মৃত্যু!
কার কাছে চাইবো বিচার,
একি নিয়তির লিখন!
জীবকার টানে ঘর থেকে যখন
হাসি মুখে,কিংবা জগতের কষ্ট নিয়ে
এসেছিলো কাজে,তখন কি জানতে
এ দেখাই প্রিয় জনের শেষ দেখা!

এক দিকে চেনা নেই জানা নেই ছোট
বালক রাষ্ট্রের ছিদ্র বন্ধে প্রানান্ত চেষ্টা,
আস্থায় অবিচল।
অন্যদিকে সেল্ফিবাজ,লাইভ রোগে
আক্রান্ত, মানুষের অবয়বের প্রাণী গুলো
এসেছিলো, অন্য গ্রহ থেকে।
ছিঃছিঃ ধিক্কারে তারা আজ সন্মানিত!

অপর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি নিয়ে বুক ভাঙ্গা কান্নায়,
মানবতার সে কি দৃষ্টান্ত উদ্ধারকারী বন্ধুদের ।
কি দিয়ে শোধিব এ ঋণ বন্ধু।

কতদিন আর চলবে এভাবে?
জীবন্ত দগ্ধ হবে মানুষ! পানিতে জীবনাবসান,
গাড়ির চাকায় রক্তে রঞ্জিত রাজপথ!
নিরাপদ জীবন,নিরাপদ সড়ক,
বেঁচে থাকার অধিকারে, জীবনের নিরাপত্তার দাবীতে
আর কতো স্লোগান,মানব বন্ধন!

জীবন বাজি রেখে যারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলে
জীবন বাঁচাতে, বিবেকের তাড়নায়
মানবতার সেবায়,কেঁদেছো অপারগতার
নোনা জলে,ঘামের জলে ভাসিয়েছো দেহ
সালাম তোমাদের, হে অকুতোভয় বীর সৈনিকেরা।

মায়ের আর্তনাদ,বাবার বোবা চাহনি
স্বজন হারানো বেদনায় নির্বাক আত্মীয় ভাই বোন,
পিতা,মাতা হারা সন্তান,স্বামী,স্ত্রী
ভালোবাসার মানুষ শুন্য হৃদয় গুলো
সমবেদনার ভাষা নেই।

অপেক্ষা আরেক বার আগুনে পোড়ার!
ঘাতক যানবাহনের তলায় পিষ্ট হবার!
অচেনা বুলেটে ঝাঁঝরা হবার।
বিধি তোমার কাছেই দিলাম বিচার।
অপরাধ কি আমার!
মানুষ হয়ে মানুষ হিসাবে বেঁচে থাকার,
পাবোনা কি অধিকার!

জন্মে ছিলোনা দায়,মৃত্যুর দায় কেন তবে!
প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিল! সেই মিছিলে
আমার স্লোগান,অধিকার চাই বেঁচে থাকার!
পরের মিছিলে আমি হবো কয়লা,
আর্তচিৎকারে ভারী করবো আকাশ বাতাস!

বার্ণ ইউনিট,অপারেশন থিয়েটার,
কোন মর্গে স্থান হবে কি আমার!
নাকি ছাই,ভস্ম হয়ে নসীব হবেনা এক মুঠো মাটি!
পঁচা ডোবায় পোকায় খাবে,দুর্গন্ধে জানান দেব,
হে, আমিও ছিলাম তোমাদের একজন।

জীবন তোমাকে রুদ্রের ভাষায় বলি,
“এ যেন নষ্ট জন্মের লজ্জায় আড়ষ্ট কুমারী জননী ,
স্বাধীনতা একি নষ্ট জন্ম?

আর আমি বলি, জন্মই যেন আজন্ম পাপ !
মৃত্যু দ্রুব সত্য, কিন্তু মৃত্যুই করছে
জন্মকে প্রশ্ন বিদ্ধ!
আল্লাহ দেয়া আযাব,গজব,দূর্ঘটনা
সবইতো মৃত্যুর পরোয়ানা।
মানুষের মাঝে মানুষ খুঁজি,
বিপদ এলেই, মানুষ, অমানুষ দুই দেখি।
অমানুষের ভীড়ে মানুষ পেলেই স্যালুট করি।
অমানুষদের ঘৃনা করি,ঘৃনা করি।
আমি আগুনেই পুড়ি,আগুন খাই,আগুনেই মরি।

আমাদের বাণী-আ.আ.হ/মৃধা

[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।