সকলেই জানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা শতভাগ বেতন সরকারি কোষাগার থেকেই পান। ক` জনই বা জানেন যে, শিক্ষকরা আসলেই বেতনই পান না। যা পান তা বেতনের নামে অনুদান মাত্র। আর তা দিয়ে শিক্ষকরা ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ, চিকিৎসার ব্যয়ভার, পরিবারের ভরনপোষণ চালাতে গিয়ে ঋনগ্রস্ত হয়ে পড়েন।

বেসরকারি শিক্ষকরা মাসে বাড়িভাড়া বাবত এক হাজার টাকা পান। এক হাজার টাকা দিয়ে তো খোলা আকাশের নিচে থাকা ছাড়া আর কোথাও জায়গা পাওয়া যাবে না। এই এক হাজার টাকা বাড়িভাড়া দিয়ে কি তাদের সঙ্গে ঠাট্রা-মশকরা করা হচ্ছে না।

সরকারি চাকরিজীবীরা ঈদ বোনাস পান শতভাগ। আর বেসরকারি শিক্ষকরা ঈদ বোনাস পান মাত্র বেতনের ২৫ শতাংশ। এই কারনে বেসরকারি শিক্ষকদের নিকট ঈদ উৎসব মানে আতংক। কারন ছেলেমেয়ে এবং পরিবার পরিজনদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য ঈদের বাড়তি খরচ যোগাতে গিয়ে তাদের ঋনগ্রস্ত হতে হয়।

আবার বেসরকারি শিক্ষকদের চিকিৎসা ভাতা নামে যে ৫০০ টাকা দেয়া হয় তা অত্যন্ত দুঃখজনক। কারন বর্তমানে ডাক্তারের কাছে গেলে ভিজিটেই লাগে ৫০০ টাকা। এতে ঔষুধ কেনার টাকা আর থাকে না। আর তাছাড়া বেসকারি শিক্ষকদের হাউজ লোন, বদলি, পদোন্নতি নেই যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।

সরকার ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট দিয়ে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আশার আলো দেখিয়ে ছিল। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন সেই ইনক্রিমেন্ট থেকে ও বর্তমানে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ হারে কর্তন করা হচ্ছে অবসর ও কল্যাণ তহবিলের নামে। এখন সরকারি অংশের সিংহভাগ কর্তনেই চলে যাচ্ছে ভবিষ্যতের জন্য। যেখানে পূর্বে কর্তন করা হতো ৬ শতাংশ। বর্তমানে এখন কর্তন করা হচ্ছে সরকারি অংশের (৬+৪) মোট ১০ শতাংশ হারে।

পরিশেষে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট বিনীত অনুরোধ, আপনি দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি এবং রিজার্ভ ফান্ড সহ সকল ছাত্র, ছাত্রীর বেতন সরকারের কোষাগারে নিয়ে যদি মুজিববর্ষেই বেসরকারি এমপিওভুক্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণের ঘোষনা দেন তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসে আপনি বঙ্গকন্যা, শিক্ষারত্ন হিসাবে অমর হয়ে থাকবেন পাঁচ লক্ষাধিক শিক্ষকের হৃদয়ের মাঝে।

মো. আজাদ; শিক্ষক ও কলামিস্ট, গণসংযোগ বিষয়ক সচিব, বাশিস (কেন্দ্রীয় কমিটি নজরুল)

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।