৪ ডিসেম্বর ভাস্কর জাহানারা পারভীন কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের রিলিফ শিল্পকর্ম `মুক্তির সোপান` উদ্বোধনে কবি নজরুল সরকারি কলেজে এসেছিলেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। স্টেজে বসে পদোন্নতি, পদসৃষ্টি ও পদসোপান নিয়ে মাননীয় মন্ত্রীর সাথে একান্তে কথা বলার সুযোগ হয়।

মাননীয় মন্ত্রী বলেন, পদসৃষ্টি ও পদসোপান নিয়ে কথা বলতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীকে ফোন করে বলেছিলেন , জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চা খেতে যাবেন। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী অফিসিয়াল ব্যস্ততায় সময় দিতে না পারায় দুঃখপ্রকাশ করেন। খুব সম্ভব আমার কলেজে আসার আগের দিনের ঘটনা। এবার মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী জনপ্রশাসনের সচিবের ওখানে চা খাবার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। জনপ্রশাসন সচিব বিনয়ের সাথে নিজেই মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর অফিসে চা খাবেন বলে জানান।

জনপ্রশাসন সচিব ১ সপ্তাহের মধ্যে সভা করবেন বলে শিক্ষামন্ত্রীকে জানান। মাননীয় মন্ত্রী হেসে বলেছিলেন, এ মাসে আপনি অবসরে যাবেন, আদৌ এটি সম্ভব হবে কিনা? জনপ্রশাসন সচিব তবুও কথা দিয়েছিলেন। কথা রেখেছেনও। প্রত্যাশিত হয়তো হয়নি। আরো জানতে হবে।

একজন মন্ত্রীর এ যে পদক্ষেপ, বিরল ঘটনা। প্রকৃত অভিভাবকের মতোই কাজ করেছেন। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা।

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রেখেছেন জনপ্রশাসনের মাননীয় সচিব। শিক্ষা ক্যাডারে ২য় গ্রেডে ৩টি অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও ৯৮ টি ৩য় গ্রেডের পদের অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা তাঁর নিকটও কৃতজ্ঞ। আশাকরি, দ্রুত অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাবে। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা শিক্ষার সিনিয়র সচিব স্যার ও মাউশি ডিজি মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। আরো অনেকদূর যেতে হবে।

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ঢাকার সরকারি ৭ কলেজের অধ্যক্ষদের সভায় মাননীয় মন্ত্রী বলেছিলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী থাকাকালে উনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে কঠিন ফাইট করে অনেক সুযোগ সুবিধা আদায় করেছিলেন। তখন এটাও বলেছিলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রেও তাই করবেন।

২০১৫ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তৎকালীন মুখ্য সচিব জনাব আবুল কালাম আজাদ (বর্তমান এসডিজি সমন্বয়ক), অর্থ মন্ত্রণালের সিনিয়র সচিব জনাব মাহবুবুর রহমান, জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব ড. কামাল নাসের চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত কোর কমিটি ও প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটির (২৬ ক্যাডার) তৎকালীন সভাপতি কৃষিবিদ বাহাউদ্দিন নাসিম ও আমাদের সাথে বিবিধ আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈষম্য নিরসনে চূড়ান্ত সমঝোতা হয়। সভায় শিক্ষা ক্যাডারের তখনকার সমিতির সভাপতি হিসেবে প্রফেসর নাসরিন বেগম এবং সমিতির মহাসচিব ও প্রকৃচি-বিসিএস স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য হিসেবে আমি ছিলাম। মাননীয় অর্থ মন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত বেতন বৈষম্য নিরসন কমিটি এর অনুমোদন দেয়। কমিটির সদস্য ছিলেন বানিজ্য মন্ত্রী জনাব তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী জনাব আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী জনাব মতিয়া চৌধুরী ও শিক্ষামন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ। আমরা এদের সবার সাথে দেখা করেছিলাম।

সিদ্ধান্ত ছিল, ১৪ সপ্তাহ অর্থাৎ ১০০ দিনের মধ্যে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে বৈষম্য নিরসন হবে। সিদ্ধান্ত ছিলো, সংগঠনের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জনপ্রশাসনে যাবে। সেখানে জনপ্রশাসন, অর্থ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় একসাথে বসে জিও জারি করবে। কোন সমস্যা থাকলেও সেটা পরে ঠিক করে নেয়া যাবে।

সমিতির প্রস্তাবিত দাবি মাউশি পুরো বিবেচনায় নেয়নি।পরবর্তীতে তথ্য উপাত্তসহ বিস্তারিত আকারে প্রস্তাব প্রেরণে মাউশি ৩ বছর সময় নেয়। প্রয়াত মাউশি ডিজি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করেন। হঠাৎ স্যার মারা যান। পরে অধ্যাপক সামছুল হুদা ভারপ্রাপ্ত থাকাকালীন এটি ফরমালি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। ঐ সময়ের সিদ্ধান্তের আলোকে অনেক ক্যাডার তাদের পদসৃষ্টি ও পদসোপান অর্জন সম্ভব করেছে। আমরা পিছিয়ে আছি।

লেখক: অধ্যক্ষ
কবি নজরুল সরকারি কলেজ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।