ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা;  মংলা ও সুন্দরবন অতিক্রম করছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান।  সাতক্ষীরার উপকূলে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এর আগে ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধার  দিকে উপকূলের বাংলাদেশ অংশে পৌঁছে। ভারতের সাগরদ্বীপের পাশ দিয়ে সুন্দরবন ঘেঁষে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ভূভাগে উঠে আসছে।

ঘূর্ণিঝড় আম্পান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়ার পর স্থলভাগে তাণ্ডব চালাতে চালাতে অগ্রসর হচ্ছে কলকাতার দিকে, এর বিস্তার প্রবেশ করেছে বাংলাদেশেও।

এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান বিকাল ৫টার দিকে উপকূলের বাংলাদেশ অংশে পৌঁছেছে। ভারতের সাগারদ্বীপের পাশ দিয়ে সুন্দরবন ঘেঁষে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ভূভাগে উঠে আসছে। ওই সময় এর কেন্দ্রের কাছে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝেড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে সাগর ও নদীর পানি ৩-৫ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলার কলাপাড়ার এক ইউনিয়নের ১৭টি গ্রাম ও রাঙ্গাবালীর ৮টি গ্রাম এবং গলাচিপার ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এদিকে কলাপাড়ায় নৌকা ডুবে সিপিবি টীম লিডার শাহআলম নিখোঁজ রয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড় আমফানের কারণে পায়রা সমুদ্র বন্দর ও পটুয়াখালী জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া বিভাগ। এ পর্যন্ত জেলার ৩ লাখ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মাসফাকুর রহমান জানান, মধ্য চালিতাবুনিয়া, বিবির হাওলা, চরলতা, গোলবুনিয়া, চর আন্ডা, খালগোড়া, গোঙ্গীপাড়া, চর কাশেম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৭৪০টি বাড়ি ঘর প্লাবিত হয়েছে। বিচ্ছিন্ন চরের মানুষদের সাইক্লোন শেল্টারে নিয়ে আসা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রের মানুষের খাওয়ার জন্য শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া যারা রোজা আছেন তাদের ইফতারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সুখচর, নলচিরা, চরঈশ্বর ও নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ২৫ টি গ্রাম অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে।

 ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারে বরগুনার চার স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ফসলের ক্ষেত এবং মাছের ঘেরসহ বাড়িঘর তলিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কাওছার আহমেদ বলেন, বুধবার সকালে জোয়ারের চাপে জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ মেরামত করতে মাঠে নেমেছি। দুর্যোগ কালীন লোকালয়ে পানি প্রবেশ প্রতিহত করতে জিওব্যাগের মধ্যে বালুভর্তি করে আমরা বেড়িবাঁধগুলো সংস্কার করছি।

জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতায় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় এবং দ্বিতীয় পক্ষের চাঁদের সময়ের শেষ দিনের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ ফুট অধিক উচ্চতা জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

এ দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালীর প্রায় তিন শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

আমাদের বাণী ডট/২০ মে ২০২০/পিবিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।