ভাড়া না পেয়ে চলন্ত বাস থেকে জোর করে ফেলে দেয়ার পর ‘সুপার সনি’ বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা গেছেন সুমন হোসেন (৩৫) নামের এক যাত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে পাবনার পাকশী লালন শাহ সেতুর টোল প্লাজার কাছে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুমন ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ঝাউতলা গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে।

পরিবারের অভিযোগ, ভাড়া না পেয়ে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দিয়ে সুমনকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা।

এদিকে ঘটনার পর টোল প্লাজার সিসিটিভির ফুটেজ দেখে বাসটি আটকের চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

স্থানীয় ও পারিবারকি সূত্রে জানা যায়, সুমন হোসেন ঈশ্বরদীর পাকশী রুপপুর বাজারে হোটেলের কর্মচারী ছিলেন। সম্প্রতি পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে সেখান থেকে সকল দোকান উচ্ছেদ করে প্রশাসন। এরপর কিছুদিন বেকার থাকার পর কুষ্টিয়ার একটি হোটেলে কাজ নেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর রুপপুর মোড় থেকে কুষ্টিয়াগামী ‘সুপার সনি’ নামক বাসে ওঠেন সুমন। ভাড়া না থাকায় বাসের হেলপারের সাথে কথা কাটাকাটি হয় তার। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৭টা ৩৯ মিনিটে বাসটি লালন শাহ সেতু টোলপ্লাজা অতিক্রম করার সময় চলন্ত অবস্থায় সুমনকে বাস থেকে জোর করে ফেলে দেয়া হয়। এরপর ওই বাসের পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন তিনি।

পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়। পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে। সেখানে রাত এগারোটার দিকে চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সুমনের চাচা গিয়াস উদ্দিন ও ফুফু মোছা. বেগম অভিযোগ করেন, ভাড়া না পেয়ে চলন্ত বাস থেকে জোর করে ফেলে দিয়ে সুমনকে হত্যা করেছে বাসের হেলপার। সে খুব ভাল ছেলে ছিল। পরিবারের প্রতি খুব কর্তব্যপরায়ণ ছিল। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তারা।

লালন শাহ সেতুর টোল প্লাজার সুপারভাইজার জানান, সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে চলন্ত বাস থেকে তাকে ফেলে দেয়া হয়েছিল। তারা দ্রুত স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় আহত সুমনকে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন। পরে জানতে পারেন আহত সুমন মারা গেছেন।

পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে বাসের চালক হেলপারের নাম পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। বাসটি আটকসহ জড়িত আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।