নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা;  করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা এবং পরীক্ষা করাতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) কর্তৃপক্ষ। মাত্র তিনদিনেই সেখানে সন্দেহভাজন অন্তত ১৯ জন করোনা রোগী মারা গেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৃতদের মধ্যে দুই জনের পরীক্ষা করে করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। বাকিরা করোনার লক্ষণ নিয়ে মারা গেছেন। কিন্তু ঢামেক কর্তৃপক্ষ ওই মৃত ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষা করেনি বলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন।

তবে অন্য একাধিক সূত্র দাবি করেছে, ঢাকা মেডিকেলে নতুন করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি শুরুর পর ৩ দিনে অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মো. রিয়াজ গণমাধ্যমকে বলেছেন, আজ সোমবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সর্বমোট ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ৪ জন করোনা পজেটিভ থাকলেও বাকিরা সন্দেহভাজন এবং তাদের পরীক্ষা করা হয়নি।

কিছু চিকিৎসক এবং রোগীর বিরোধীতা সত্ত্বেও গত শনিবার থেকে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া শুরু করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেখানকার বার্ন ইউনিটকে করোনা ইউনিটে পরিণত করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেখানে ৩০০ জন করোনা রোগীর চিকিৎসা দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে। তবে প্রয়োজন হলে আরও বেশি রোগী ভর্তি করা যাবে। যদিও কিছু রোগী সেখানে চরম সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলেছেন।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, সোমবার পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী ভর্তি হয়েছে। ১৯ জন সেখানে মারা গেছেন, যার মধ্যে দু‘জনের করোনা পজেটিভ ছিল। তবে অন্যদের করোনার লক্ষণ থাকলেও কর্তৃপক্ষ তাদের নমুনা পরীক্ষা করেনি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি জানান, অধিকাংশ রোগীই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। হাসপাতালে ভর্তির কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।

জানা গেছে, শুরুতে ইনডোর, আউটডোর এবং অন্যান্য জায়গা থেকে নমুনা নিয়ে করোনা পরীক্ষা করছিল ঢামেক কর্তৃপক্ষ। তবে এখন শুধুমাত্র ভর্তি রোগীদের করোনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (০৪ মে ২০২০) তথ্য অনুযায়ী,   করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ছয় হাজার ৩১৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ছয় হাজার ২৬০টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৮৭ হাজার ৬৯৪টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ৬৮৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি গতকালের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও পাঁচজন। এ নিয়ে মারা গেছেন ১৮২ জন। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও ১৪৭ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ২১০ জন।

আমাদের বাণী ডট/০৪ মে ২০২০/পিবিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।