গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা; সোমবার মুুসলমান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এবং সড়কে গণপরিবহন না থাকার পরও ভোগান্তির মধ্যে শেষ মুহূর্তে প্রিয়জনের সাথে ঈদ করতে ঢাকা ছেড়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে বাড়ি ফিরছে শত শত মানুষ।
আজ রবিবার (২৪ মে ২০২০) বেলা বাড়ার সাথে সাথে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষের চাপ ও ভোগান্তি বাড়তে দেখা যায়।
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের মানিকগঞ্জ অংশের পাটুরিয়ায় সকাল থেকে ফেরি পারাপারে হাজার মানুষের স্রোত নেমেছে। আর অন্যদিকে ঘাটের ওপারে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট । রাজবাড়ীতে গত ২৪ ঘন্টায় ২৯ জনসহ মোট ৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এমনকি এই ঘাটের ৫ জন কর্মচারীও এ আক্রান্তের মধ্যে রয়েছে। এত কিছু উপেক্ষা করেই পার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। এ সময় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি যাত্রীদের। প্রতিটি ফেরিতে গাদাগাদি করে যাত্রীরা পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়ায় পদ্মা নদী পার হয়ে আসছেন এবং সড়কে গণপরিবহন না থাকার কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় কয়েকগুন বাড়তি ভাড়া দিয়ে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, অটোরিকশা, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যাচ্ছেন তারা।
ঘরমুখো যাত্রীরা জানায়, সড়কে গণপরিবহন না থাকায় কয়েকগুন বেশি ভাড়া দিয়ে তারা পাটুরিয়া পর্যন্ত এসে ফেরিতে নদী পার হয়ে দৌলতদিয়ায় এসেছেন। কিন্তু দৌলতদিয়াতেও পরিবহন না থাকায় বাড়তি ভাড়া দিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন।
তারা জানান, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আছে জেনেও বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনের সাথে ঈদ করতে বাড়িতে যাচ্ছেন।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখা সহকারী ব্যবস্থাপক মাহবুব হোসেন জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে আজ ৯টি ছোট-বড় ফেরি চলাচল করছে। পাটুরিয়া প্রান্তে যাত্রীদের চাপ রয়েছে এবং দৌলতদিয়া প্রান্তে কোন যানবাহনের সিরিয়াল নেই। যাত্রীরা স্বাভাবিকভাবে ফেরি পারাপার হচ্ছে।
বর্তমানে রাজবাড়ী জেলা বড় ধরনের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঈদে জেলার দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ঘরমুখো হাজারো মানুষ যাতায়াত করছে । ফলে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়বে বলেও ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল রাত ও আজ আক্রান্তদের মধ্যে রাজবাড়ী শহরসহ সদর উপজেলার ছয়জন, বালিয়াকান্দির ১০ জন এবং পাংশার ২ জন স্বাস্থ্যকর্মীসহ ১৩ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে রাজবাড়ী শহরের ভবানীপুর, সদর উপজেলার উড়াকান্দা, দর্পনায়ারপুর ও কামালপুর, বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের সাধুখালী গ্রামে ৯ জন ও বাকসাডাঙ্গী গ্রামে একজন এবং পাংশা শহরের নারায়ণপুর গ্রামে একজন, মৈশালায় একজন, পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মী , কলিমহরে দুইজন, জয়কেষ্টপুর গ্রামের দুইজন, চর ঝিকরীতে একজন ও মৌরাটে একজন এবং বাহাদুরপুরের রঘুনন্দনপুর ৪ জন শনাক্ত হয়েছে।