নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা;  বিশ্বব্যাপী দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত বিশ্বের প্রতিটি দেশেই যেন বিদ্যুতের গতিতে এ ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে প্রতিনিয়তই নতুন করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রাণঘাতী এই করোনাভাইরাসের কারণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকসহ সকল বদলি কার্যক্রম স্থগিত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।

চলতি মাসের গত ১৯ তারিখ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) বদলি কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। করোনা সংকট কেটে গেলে পুনরায় শিক্ষক বদলি শুরু করা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে  জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি নীতিমালা অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শিক্ষক বদলি কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। অন্যান্য বছরের মতো এবারও যথা সময়ে সহকারী শিক্ষকদের বদলি আবেদন জমা নেয়া হলেও বর্তমান করোনাভাইরাসের কারণে সকল বদলি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ডিপিই। এ কারণে বদলিপ্রত্যাশী আবেদনকারী শিক্ষকরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও বদলি কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, ‘করোনাভাইরাসের ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণে বদলি কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পূণরায় এটি শুরু করা হবে। সময় বৃদ্ধি করে শিক্ষকদের বদলি করা হবে।’

মো. ফসিউল্লাহ বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে আমরা সকলে আশঙ্কায় রয়েছি, এ কারণে বদলির চেয়ে আমাদের সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ সব বিষয় বিবেচনা করে গত ১৯ মার্চ থেকে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বদলি বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে যারা বদলির জন্য আবেদন করেছেন, তাদের মধ্যে যারা যাচাই-বাছাইয়ে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেসব শিক্ষকদের বদলি করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে বেশ কিছু শিক্ষকদের আবেদন যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করে রাখা হয়েছে। বদলি কার্যক্রম শুরু হলে তাদের নির্দেশনা জারি করা হবে। তবে বদলি কার্যক্রম নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মনোক্ষুণ্ণ ও হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মহাপরিচালক।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিন দিন এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। সর্বশেষ হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত ৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন পাঁচজন। করোনার বিস্তাররোধে দেশের সব স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর। চীন ও যুক্তরাজ্য ছাড়া সব দেশ থেকেই যাত্রী আসা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দেশের সব বিপণিবিতান। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে আদালতও। এমনকি একাধিক এলাকাকে লকডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহন। এ কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তার জন্য দেশের সব জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে সশস্ত্র বাহিনী।

আমাদের বাণী ডট কম/২৬ মার্চ ২০২০/টিএ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।