কার্যদিবসের সিংহভাগ সময় নানা প্রোগ্রামে অফিসের বাইরেই পার করছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক। দিনে চার থেকে পাঁচটি প্রোগ্রামে যোগ দিচ্ছেন তিনি। আর প্রোগ্রামগুলোতে যোগদান করতে গিয়ে অফিস চলাকালে বেশির ভাগ সময়েই বাইরে থাকছেন তিনি। মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ না পেয়ে বিপাকে পড়ছেন, ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সারা দেশ থেকে সেবা নিতে আসা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শিক্ষক আর মাউশি কর্মকর্তারা হাস্যরস করে বলছেন, এত প্রোগ্রামের ভিড়ে মাউশি ডিজির অফিস করার সময় কোথায়!

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিনোদপুর কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের প্রদর্শক মো. শওকাত আলী। গত বছর আগস্টে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের পর চলতি বছর মার্চে নির্দোষ প্রমাণিত হলে মামলা থেকে অব্যাহতি পান। হাজত বাসের সময়কার বেতন-ভাতার অংশ উত্তোলন করতে দফায় দফায় আবেদন করেও এ প্রদর্শক তার ন্যায্য বেতন-ভাতা পাননি।

মঙ্গলবার শওকাত আলী জানান, দফায় দফায় আবেদন করেও তিনি ন্যায্য বেতনের অংশটিও পাননি। তাই বেলা ১১টায় মাউশিতে এসেছেন। বিকাল পৌনে ৫টা পর্যন্ত থেকেও মাউশি ডিজির সাক্ষাৎ পাননি।

মহাপরিচালকের দৈনিক কর্মসূচি থেকে জানা গেল, মঙ্গলবার পাঁচটি প্রোগ্রামে যোগদানের শিডিউল ছিল তার। ২৩ ডিসেম্বর সোমবারও পাঁচটি অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন তিনি। ২২ ডিসেম্বরও চারটি প্রোগ্রামে তিনি অতিথি ছিলেন। সব মিলিয়ে সপ্তাহের প্রায় বেশির ভাগ দিনই অফিসের বাইরে প্রোগ্রামে সময় পার করছেন তিনি।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যায়ের তদারক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় সারা দেশ থেকে সেবা নিতে আসেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। কিন্তু মহাপরিচালক অফিসের বাইরে প্রোগ্রামগুলোতে বেশি সময় ব্যয় করায় ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা। অনেক শিক্ষক অভিযোগ করেন, তদবির আর বাণিজ্যতে জর্জরিত এখন মাউশি। তদবির, ঘুষ আর অনৈতিক লেনদেন ছাড়া যৌক্তিক কোনো বদলিই হয় না মাউশির মাধ্যমে।

নওগাঁ সদরের চকআতিথা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম। জেলার মহাদেবপুরে সরস্বতীপুর উচ্চবিদ্যালয়ে বিধিবহির্ভূতভাবে আবু সায়েম নামে একজনকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে মর্মে মাউশিতে জুলাইয়ে অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন নজরুল ইসলাম। গতকাল তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেন, মাউশি কর্মকর্তারা আসলে শাঁখের করাত। তারা নিজেরা সুবিধা নিয়ে অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগী সবাইকেই ভোগান।

অফিসের বাইরে প্রোগ্রামে ব্যস্ত থাকা, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নানা অভিযোগ-অসন্তোষ প্রসঙ্গে মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘বর্তমানে প্রোগ্রামের চাপ বেশি। প্রোগ্রামে বাইরে থাকলেও কাজের ব্যাঘাত ঘটছে না।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের আমার সঙ্গে সাক্ষাতের প্রয়োজন নেই। তাদের কাজের জন্য বিভিন্ন দপ্তর রয়েছে।’  সৌজন্যে বাংলাদেশ প্রতিদিন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।