পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা-২০১৯ এর আর বাকি মাত্র ২০ দিন। আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে সারাদেশে একযোগে এ পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। অথচ বেতন বৈষম্য নিরসনের এক দফা দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলনে থাকা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকরা তাদের দাবি ১৩ নভেম্বরের মধ্যে মানা না হলে এ পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এর পরও দাবি মানা না হলে চলতি বছরের বার্ষিক পরীক্ষাও বর্জন করবেন বলে আগাম কর্মসূচি দিয়েছেন তারা। ২৩ অক্টোবর রাজধানীতে মহাসমাবেশে পুলিশের লাঠিচার্জের পর এ ঘোষণা দেন। এ অবস্থায় যথাসময়ে এ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠান নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। লাখ লাখ অভিভাবক উদ্বিগ্ন। এ পরীক্ষায় প্রায় ২৯ লাখ ছাত্রছাত্রী অংশ নেওয়ার কথা এ বছর।

প্রাথমিক শিক্ষকরা তাদের দাবি পূরণের জন্য আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত আলটিমেটাম বেঁধে দিলেও গত তিন দিনে তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। উল্টো শিক্ষকরা এ পরীক্ষা বর্জন করলে তারা বিকল্প উপায়ে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবছে। এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন। তিনি জানান, ‘শিক্ষকরা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা না নিতে চাইলে বিকল্প উপায়ে পরীক্ষা নেয়া হবে। পরীক্ষা যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে একবার মাধ্যমিক শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছিলেন, তখন তো মাধ্যমিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঠিক সময়েই। তাহলে প্রাথমিকে কেন তা হবে না?’

সারাদেশের ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায়  পৌনে চার লাখ শিক্ষক কর্মরত। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের মোট ১৪টি সংগঠন মিলে সম্প্রতি গঠন করেছে ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ’। এই পরিষদের ডাকে আন্দোলনের কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

মুখে কালো কাপড় বেঁধে ক্লাস নিলেন শিক্ষকরা :এদিকে ২৩ অক্টোবর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশে শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ ও হয়রানির প্রতিবাদে গতকাল শনিবার সকাল ১১টা থেকে ১১টা ১০ মিনিট পর্যন্ত মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

জানা যায়, প্রধান শিক্ষকরা জাতীয় বেতন স্কেলের দশম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে বেতন চান। অথচ সরকার তা দিতে রাজি নয়। এখানেই সমস্যা।  এর আগে গত ২৯ জুলাই এই শিক্ষকদের বেতন বাড়ানোর এক প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর তা নাকচ করে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর সারাদেশের শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে পরীক্ষা বর্জনসহ এই আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।  সৌজন্যে দৈনিক শিক্ষা

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।