নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা; বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। ওই রিটে দেশের স্থল ও নৌবন্দর বন্ধের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।

আজ রবিবার (১৫ মার্চ ২০২০) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ নিজেই।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে অধিকাংশ দেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। পাশের পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়ার পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ না করায় অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন; দেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত, দু-এক বেলার মধ্যেই বন্ধ হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

অনেক অভিভাবক ইতিমধ্যে নিজ উদ্যোগেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্তানকে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। এ কারণে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। অভিভাবকরা বলছেন, স্কুল-কলেজগুলো বন্ধ না করে সরকার এখন কী দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ার পর বন্ধ করা হবে?

আরও পড়ুন; দেশে আরও ২ জন করোনা রোগী শনাক্ত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

তারা বলছেন, কোনো স্কুলে যদি করোনা আক্রান্ত একজনকেও পাওয়া যায় তাহলে কোয়ারেন্টাইনে যেতে হবে স্কুলের প্রায় সবাইকে। ছোটো ছোটো শিশুদের কীভাবে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হবে। তারা কী বাবা-মা ছাড়া একা থাকতে রাজি হবে। হোম কোয়ারেন্টাইনও কি শিশুদের দিয়ে সম্ভব হবে?

আরও পড়ুন; খনও খোলা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আতঙ্ক-উৎকণ্ঠায় অভিভাবক-শিক্ষার্থীরা

সরকার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে স্কুল বন্ধ না করে অ্যাসেম্বলি মাঠে না করে শ্রেণিকক্ষে আয়োজনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে একটি সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। এমন বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও।

আরও পড়ুন;করোনা নিয়ন্ত্রণে হজ ক্যাম্পে সেনা মোতায়েন

অভিভাবকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের রোগ প্রতিরোধে জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে স্কুলের চেয়ে জনসমাগম আর কোথায় বেশি হয়। স্কুলে প্রবেশ এবং ছুটি হবার সময় বের হতে গিয়ে স্কুলের ছোটো গেট দিয়ে একে অপরের সংস্পর্শে সবচেয়ে বেশি আসে। ছোট্ট একটি ক্লাসরুমে ৭০ থেকে ৯০ জন শিক্ষার্থী চার-পাঁচ ঘণ্টা অবস্থান করে। শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমে একটি বেঞ্চে চার-পাঁচ বা ছয় জন পর্যন্ত গাদাগাদি করে বসে। ফলে কোনো শিক্ষার্থী ভাইরাসের সংক্রমণ হলে তা অন্য শিক্ষার্থীর মধ্যে ছড়নোর আশঙ্কা থাকে।

আরও পড়ুন; দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের চিন্তাভাবনা চলছে জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্কুল ছাড়াও আতঙ্কে রয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। তারা গণপরিবহনে চড়ে আসে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা পালন করা শিক্ষার্থীদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আবাসিক হলে প্রতিটি কক্ষে চার-পাঁচ জন করে থাকে । গণরুমে থাকে ৩০ থেকে ৪০ জন। ফলে একজন অসুস্থ হয়ে পড়লেও অন্য সবার অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

আরও পড়ুন; স্কুল-কলেজ বন্ধ না করায় প্রধানমন্ত্রীকে একগুঁয়ে বলছে ব্রিটেনের জনগণ

গত ৮ মার্চ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। তবে তারা সুস্থ হয়ে গেছেন বলে দাবি সরকারের আইইডিসিআরের। গতকাল শনিবার (১৪ মার্চ) রাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সংবাদ সম্মেলন করে জানান, দেশে আরও দুজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

আমাদের বাণী ডট কম/ ১৫ মার্চ ২০২০/বিপি

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।