পপি রানী দাস; ২০১৮ সালের প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রায় ২৪ লক্ষ পরীক্ষার্থীদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ৫৫ হাজার পরীক্ষার্থী যা মোট পরীক্ষার্থীর শতকরা ২.৩ ভাগ। তাদের মধ্যে চূড়ান্তভাবে ১৮ হাজার পরীক্ষার্থী সুপারিশ প্রাপ্ত হলেও বাকি ৩৭১৪৮ জন পরীক্ষার্থী সুপারিশ প্রাপ্ত হয় নি। প্রশ্ন হলো, আমরা যারা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চূড়ান্ত ভাবে সুপারিশ প্রাপ্ত হই নি তারা কি কোয়ালিটি সম্পন্ন নয়? আসলে কোন দিকটা বিবেচনা করে কোয়ালিটি সম্পন্ন বলা হয় সেটা আমার বোধগম্য নয়।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ৮নং এ স্পষ্টভাবে বলা আছে, প্রতিটি উপজেলায় শূন্যপদ পূরনের ভিত্তিতে প্রার্থী নিয়োগ দেওয়া হবে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তার যথাযথ প্রয়োগ করা হয় নি। দেখা যায়, নিয়োগ পরীক্ষায় কোনো উপজেলায় ১ জন প্রার্থী ৭০ নম্বর পেয়েও সুপারিশ প্রাপ্ত হয় না আবার কোনো উপজেলায় ১জন প্রার্থী  ৬০ নম্বর পেয়েই সুপারিশ প্রাপ্ত হয় । তাহলে এখানেও প্রশ্ন থেকে যায়, আমরা যারা ৭০ নম্বর পেয়ে ও চূড়ান্ত ভাবে সুপারিশ প্রাপ্ত হই নি তারা কি কোয়ালিটি সম্পন্ন নয়? আবার যাদের কোটা আছে তারা এর চেয়ে কম নম্বর পেয়ে ও সুপারিশ প্রাপ্ত হয় তাহলে উনারা কিভাবে কোয়ালিটি সম্পন্ন বলে বিবেচিত হয় ? যদি বেশি নম্বর দিয়ে প্রার্থীর কোয়ালিটি চিন্তা করা হয় তাহলে যারা কম নম্বর পেয়েছে তাদের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করার কি দরকার ছিল।
তাছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে যদি শুধু কোয়ালিটি সম্পন্ন শিক্ষক নেওয়া হয় তাহলে পিটি কেনো দেওয়া হয়? আমার দেখা কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান / সহকারি শিক্ষক-শিক্ষিকা পঞ্চম শ্রেণির অংক করাতে পারেন না, তাহলে উনারা কিভাবে কোয়ালিটি সম্পন্ন শিক্ষক বলে বিবেচিত হয় ?
কিছুদিন আগে প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মহাপরিচালক মোঃ ফসিউল্লাহ স্যার বলেছেন, ভাইভা পরীক্ষায় পাস/ফেল নেই। হাজির হলেই ১৪/১৫ পাওয়া যায় । তাই বর্তমানে নিয়োগবিধি মোতাবেক উত্তর পত্রের শীটে কোড নম্বর দেয়া থাকায় লিখিত পরীক্ষায়ই মেধাবী নির্বাচন নিয়ে কোন বিতর্ক থাকে না। এক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের যোগ্যতা নিয়ে মন্তব্য করা মূর্খতা ছাড়া কিছুই নয়।
তাছাড়া মানবতার মা বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাথমিকে মৌখিক পরীক্ষায় কোনো ফেল নেই। সুতরাং এখানেই স্পষ্ট যে, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ২০১৮ লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চূড়ান্ত ভাবে সুপারিশ প্রাপ্ত না হওয়া ৩৭ হাজার মেধাবী শিক্ষার্থীরা যথেষ্ট কোয়ালিটি সম্পন্ন। রেকর্ড সংখ্যক পরীক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতায় জয় যুক্ত হয়ে নিঃসন্দেহে  আমরা মেধার পরিচয় দিয়েছি।
তাই আশা করছি, মানবতার মা জননেত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত ভাবে সুপারিশ প্রাপ্ত না হওয়া ৩৭ হাজার পরীক্ষার্থীদের দ্রুত প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ দিয়ে এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিবেন।
লেখক, প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা -২০১৮ প্যানেল প্রত্যাশী, মৌলভীবাজার জেলা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।