ড. আসিফ নজরুল; যদি ক্ষমতা থাকতো আইন করতাম। বর্তমান বা সাবেক প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীগণ চিকিৎসা নিতে বিদেশে যেতে পারবেন না। ক্ষমতা, চাকরি বা ব্যবসা কোনোভাবেই তাদের সন্তানরা সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট হতে পারবেন না।

  • সপ্তাহে অন্তত একদিন তাদের গণপরিবহনে চড়তে হবে। রাস্তায় চলাকালে তারা অন্য একটি যানবাহনও থামিয়ে রাখতে পারবেন না। বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে তারা অতিজরুরি ছাড়া কোনো সফরসঙ্গী নিতে পারবেন না, এবিষয়ে সংসদকে জানাতে হবে।

জনগণের টাকায় কোনো কিছু উদ্ধোধন বা জনগনকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে তাদের নিজেদের নাম ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হবে। তাদেরকে মহামান্য ও মাননীয় বলা নিষিদ্ধ হবে। তাদের ও তাদের পরিবারের দেশে বিদেশে সকল সম্পত্তি ও আয়ের বিবরণ জনগণকে জানাতে হবে।

  • দুদকের একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন ইউনিট শুধুমাত্র তাদের বিষয়ে নজর রাখবে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও আরো বহু কিছু করতাম। যারা লুটেরা, চোর আর সন্ত্রাসী তাদের জীবন নরক বানিয়ে ছাড়তাম।

আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্র্যাম্প আছে। কিন্তু তাকে মুখ বন্ধ করে রাখতে বলার মতো পুলিশের কর্তা আছে। তার সাথে প্রকাশ্যে দ্বিমত পোষন করার মতো মন্ত্রী আছে। তার মোতায়েন ন্যশনাল ফোর্সকে বের করে দেওয়ার মতো মেয়র আছে। তার কর্মকান্ড নিয়ে উপহাস করার মতো স্পীকার আছে। তাকে তুলোধুনা করার মতো গনমাধ্যম আছে। তাকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার ভোটারদেরও আছে।

  • অর্থাৎ যত বড় স্বৈরাচার, বর্ণবাদী আর অমানুষ ট্রাম্প হোক না কেন, তাকে সামলে রাখার মতো বহু প্রতিষ্ঠান আছে সেখানে। মন্ত্রী, সংসদ, পুলিশ, মেয়র, গণমাধ্যম, নির্বাচন ব্যবস্থা সব আছে স্বতন্দ্র অস্তিত্ব নিয়ে চেক এ্যন্ড ব্যালেন্স করার জন্য।

আমাদের এখানে এসব নাই। এখানে সকল প্রতিষ্ঠান বরং স্বৈরাচারের দম্ভ, দাপট আর নিপীড়নের অস্ত্রে পরিণত হয়। নিজের দেশ আর জনগনের বুক বিদীর্ণ করে। আমেরিকা নিয়ে আমাদের হায়হুতাশ তাই হাস্যকর। কোন অতলে ডুবে যাচ্ছি আমরা তা বরং ভাবি।

  • লেখক: অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আমাদের বাণী ডট কম/১৪জুন ২০২০/ডিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।